কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র
দিল্লি-সহ গোটা দেশ জ্বলছে অশান্তির আগুনে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আজ রাতে বৈঠক ডাকা হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে। সূত্রের মতে, বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি ছাড়াও উপস্থিত থাকার কথা ছিল স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লার। কিন্তু শেষমেশ অমিত শাহের অনুপস্থিতিতেই ওই বৈঠক হয়।
অসম-সহ উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভের প্রথম আঁচ পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। তারপরে সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। আজ দিল্লির পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের লখনউ, কর্নাটকের বেঙ্গালুরু, মেঙ্গালুরু এমনকি খোদ নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের আমদাবাদ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। এ ভাবে দেশের একের পর এক এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোয় বিপাকে কেন্দ্রও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আজ ইংরেজি, হিন্দি ও উর্দু ছাড়াও দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় এনআরসি ও সিএএ আইন সম্পর্কে ভুল ধারণা ভাঙতে প্রচার চালায় কেন্দ্র। কিন্তু দিনের শেষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘর্ষে একাধিক প্রাণহানির ঘটনাই কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ কেন্দ্র। পাতা জোড়া বিজ্ঞাপনেও কোনও কাজ হয়নি। স্বরাষ্ট্র সূত্রের মতে, আজ দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকা হয়। কেননা আগামিকাল জুম্মার নমাজ রয়েছে। তার পরে নতুন ভাবে বিক্ষোভ শুরু হতে পারে বলে ধারণা সরকারের একাংশের।
অসমে হিংসার পরেই স্বরাষ্ট্র কর্তারা স্বীকার করে নিয়েছিলেন, ওই রাজ্যে পরিস্থিতি যে এতটা খারাপ হবে সে বিষয়ে ধারণা ছিল না কেন্দ্রের। তার পরেও মন্ত্রকের ধারণা ছিল যে, অসম ও পশ্চিমবঙ্গে ওই বিলের প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। তাই এ নিয়ে আন্দোলন-বিক্ষোভ যা হবে তা দুই রাজ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তার পর তা ধীরে ধীরে থিতিয়ে যাবে।
কিন্তু সেই আন্দোলনের প্রভাব যে গোটা দেশে পড়বে এবং পরিস্থিতি যে এতটা খারাপ হবে তা বোঝা সম্ভব হয়নি বলে ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করে নিয়েছেন কিষেণ রেড্ডিও। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য বিরোধীদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তাঁর মতে, কিছু লোক বিষয়টিকে ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তৈরি করছে।
রাজনৈতিক দলগুলির কাছে তাঁর আবেদন, আগুন জ্বালানোর বদলে আগুন নেভান। অন্য দিকে এ দিন সংখ্যালঘু অধিকার দিবস উপলক্ষে উত্তরাখণ্ডে রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যাননি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কও।