বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে জলকামান। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে দিল্লিতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। গতকালই যেখানে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৩, এ দিন সকালে তা ২০-তে পৌঁছেছে। অথচ তা ঠেকাতে নাকি কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না সরকার। এই অভিযোগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের বাসভবনের বাইরে জড়ো হন বহু মানুষ, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই পড়ুয়া। রাজধানীতে হিংসা রুখতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানান সকলে।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন এবং জামিয়া কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে মঙ্গলবার কেজরীবালের বাসভবনের বাইরে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। তাতে সাড়া দিয়ে গভীর রাতে বহু মানুষ জড়ো হন মুখ্যমন্ত্রীবাসভবনের কাছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও ছিলেন সেখানে। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন তাঁরা। দাবি ওঠে, উত্তর-পূর্ব দিল্লির যে যে এলাকায় হিংসা ছড়িয়েছে, অবিলম্বে সেখানে যেতে হবে কেজরীবালকে। স্থানীয় বিধায়কদের শান্তি মিছিল বার করতে নির্দেশ দিতে হবে, যাতে যে দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে রাশ টানা যায়।
যে বা যাদের ইন্ধনে রাজধানীতে হিংসার আগুন ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে বলেও দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। হিংসায় আক্রান্তরা সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। উদ্ধারকার্য চালাতে তাই সরকারকে পদক্ষেপ করার আর্জিও জানানো হয়। শান্তি ফেরাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা-ও সাধারণ মানুষকে জানানোর দাবি ওঠে।
জলকামান দেগে বিক্ষোভ হঠানোর চেষ্টা।
আরও পড়ুন: আচমকাই পায়ে গুলি, কিছু ক্ষণের মধ্যেই সব শেষ
আরও পড়ুন: মোদী ‘শান্ত, ধার্মিক’, ইতি ডোনাল্ড ট্রাম্প
ভোররাত পর্যন্ত কেজরীবালের বাড়ির সামনে এই বিক্ষোভ চলে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী নামানো হয়। কথা বলে বিক্ষোভকারীদের নিরস্ত করার চেষ্টা করেন পুলিশকর্মীরা। কিন্তু তাতেও ঘেরাও ওঠেনি বলে খবর। শেষমেশ বিক্ষোভকারীদের হঠাতে পুলিশকে জলকামান ব্যবহার করতে হয়। তাতে ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানা গিয়েছে। পড়ুয়াদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে আটক করে সিভিল লাইন্স পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই বিক্ষোভ নিয়ে কেজরীবালের দফতরের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। তবে মঙ্গলবারই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিধায়কদের সঙ্গে একদফা বৈঠক করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। শান্তি ফেরাতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি। তার আগে অমিত শাহের ডাকা বৈঠকেও যোগ দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। যার পর গতকালই সীলামপুর এলাকার পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল।