নীরবে কাজের ফল পেল আপ

দল ভাঙিয়েও দিল্লিতে ফের হার বিজেপির

লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের পরে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের বিজয়রথ এই দিল্লিতেই প্রথম ধাক্কা খেয়েছিল কেজরীবালের কাছে। তার পর থেকেই আম আদমি পার্টি থেকে নেতা ভাঙানোর চেষ্টা শুরু করে বিজেপি। সাফল্যও আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩৩
Share:

অমিত শাহের কৌশল উপেক্ষা করে দিল্লি ভরসা রাখল শুধরে যাওয়া অরবিন্দ কেজরীবালে। দেশে বিভিন্ন প্রান্তে চারটি কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফল বেরিয়েছে আজ। তার মধ্যে গোয়ায় দু’টি আসনে জিতেছে বিজেপি। সাফল্য এসেছে অন্ধ্রপ্রদেশেও। সেখানে জিতেছে বিজেপির শরিক তথা শাসক দল টিডিপি। কিন্তু ঘরের মাঠ দিল্লির বাওয়ানাতে মুখ পুড়েছে বিজেপির। সেখানে আপ প্রার্থীর কাছে শুধু পরাজয়ই নয়, বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে ধস নামিয়ে প্রায় ১৭% ভোট বাড়িয়ে নিয়েছে কংগ্রেস।

Advertisement

লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের পরে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের বিজয়রথ এই দিল্লিতেই প্রথম ধাক্কা খেয়েছিল কেজরীবালের কাছে। তার পর থেকেই আম আদমি পার্টি থেকে নেতা ভাঙানোর চেষ্টা শুরু করে বিজেপি। সাফল্যও আসে। দিল্লির পুরভোটে বা রাজৌরি গার্ডেনে বিধানসভার উপনির্বাচনে সাফল্য আসার পরে, বাওয়ানাতে আপের দল ভেঙে জয়ী বিধায়ক বেদপ্রকাশকে নিজেদের দলে টেনে নেন অমিত শাহেরা। এতেই ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা হলে বেদপ্রকাশকেই প্রার্থী করে বিজেপি। অমিত শাহের কৌশল ছিল জেতা প্রার্থীকেই প্রার্থী করে কেজরীবালকে হারানো। আজ ফল বেরোতে দেখা গেল ‘বিশ্বাসঘাতক’ বেদপ্রকাশের বদলে কেজরীবালের পাশে থাকতেই পছন্দ করছেন বাওয়ানার বাসিন্দারা। এই ফলের জন্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন টুইট করে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেজরীবালকে। জবাবে ‘দিদিকে ধন্যবাদ’ জানিয়েছেন আপ শীর্ষনেতা।

আপ শিবিরের দাবি, পুরভোটে জয় যতটা না বিজেপির, তার চেয়ে বেশি ছিল কেজরীবাল-বিরোধী ভোট। তা বুঝেই দল রণনীতি পাল্টাতে শুরু করে। সেই কারণেই আজকের সাফল্য। পুরভোটে ও রাজৌরি গার্ডেনে হারের জোড়া ধাক্কা খেয়েই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণের কৌশল বদলানোর সিদ্ধান্ত নেন কেজরীবাল। ঠিক হয়, সব প্রশ্নে বিজেপির দিকে আঙুল না তুলে চুপচাপ নিজেদের কাজ করে যাবে দল। প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির বিরুদ্ধে মুখে তালা দেয় গোটা আপ শিবির। একই সঙ্গে বাওয়ানাতে দল ভাঙতেই নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বাড়ি-বাড়ি জল, বিদ্যুৎ, পাকা রাস্তার মতো পরিকাঠামোগত উন্নয়নে মন দেয় কেজরীবাল সরকার। পাশাপাশি, সংখ্যালঘু ভোটকেও টানতে সক্রিয় হয় দল। আপের এই কৌশলই ভেস্তে দিয়েছে অমিত শাহ, মনোজ তিওয়ারিদের পরিকল্পনা।

Advertisement

আর আপ-বিজেপির লড়াইয়ের ফাঁকে ঘর গুছিয়েছে কংগ্রেস। ২০১৫ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস ৭.৫% ভোট পেয়েছিল। সেটাই এই উপনির্বাচনে তুলে এনেছে ১৭%-এ। আজ গণনা শুরু হওয়ার পরে প্রথম এগারো রাউন্ড এগিয়ে ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী। পরে অবশ্য তৃতীয় স্থান পায় কংগ্রেস। দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় মাকেনের দাবি, দিল্লির মানুষের ভরসা যে ফের কংগ্রেসে ফিরছে এই ফল তার প্রমাণ।

দিল্লি মুখ ফেরালেও, গোয়ায় দু’টি আসনে অনায়াসেই জিতেছে বিজেপি। গত মার্চে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব ছেড়ে গোয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নেন মনোহর পর্রীকর। আজ পানাজি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হলেন তিনি। তাঁরই সঙ্গে ভলপোই কেন্দ্রে জিতেছেন বিশ্বজিৎ রাণে। এক সময়ে গোয়ায় কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন বিশ্বজিৎ। কিন্তু দলের মনোভাবে বীতশ্রদ্ধ হয়ে বেরিয়ে আসেন। বিজেপিতে যোগ দিলে তাঁকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেন পর্রীকর। অন্ধ্রপ্রদেশে নান্দিয়াল আসনে শুরু থেকেই এগিয়ে ছিল বিজেপি শরিক তেলুগু। তাঁকে তেমন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেননি ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রার্থী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement