হার্ভার্ডে শাহ ফয়জল। ছবি সৌজন্য- ফেসবুক
‘রেপিস্তান’ মন্তব্য করার দায়ে জম্মু ও কাশ্মীরের আই এ এস অফিসার শাহ ফয়জলকে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করল কেন্দ্র। সেই শো-কজ নোটিসটিই মঙ্গলবার ট্যুইটারে তুলে দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার বাড়তে থাকা ধর্ষণ সংস্কৃতিকে ব্যঙ্গ করেই ছিল তাঁর ‘রেপিস্তান’ মন্তব্য।
বিতর্কের শুরু এই বছরের এপ্রিলে। জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন দফতরের অতিরিক্ত সচিব তখন শাহ ফয়জল। কাশ্মীর উপত্যকার যুব সমাজের আইকন মেধাবী ফয়জল এই রাজ্য থেকে প্রথম আই এ এস পরীক্ষায় শীর্ষস্থান অধিকার করেছিলেন। কাঠুয়া গণধর্ষণ কাণ্ডের প্রতিবাদে যখন উত্তাল সারা দেশ, ঠিক তখনই তিনি ট্যুইটারে ‘রেপিস্তান’ মন্তব্য করেছিলেন। এরপরই তিনি হার্ভার্ডের কেনেডি স্কুলে গবেষণা করতে যান।
যদিও আমলাদের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত তাতে থেমে থাকেনি। বেসরকারি আধিকারিকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের সমালোচনা করতে পারবে না। ২০১৬ তে এই নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্র। সেই নির্দেশকে হাতিয়ার করেই শাহ ফয়জলকে কোনঠাসা করার চেষ্টা। আসে দেশদ্রোহী প্রসঙ্গও। সরাসরি তাঁকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে পদত্যাগের ‘পরামর্শ’ দেয় গেরুয়া ব্রিগেড। এরপরই তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়।
মঙ্গলবার সেই বিতর্ক আবার নতুন করে ফিরে এল। তাঁকে পাঠানো কেন্দ্রের কারণ দর্শানোর নোটিসটিই ফের ট্যুইট করে সামনে আনলেন ফয়জল। কেন্দ্রের ওই নির্দেশকে ঔপনিবেশিক সিদ্ধান্ত বলেও সমালোচনা করেছেন তিনি।
একই সঙ্গে সংবাদ সংস্থাকে তিনি জানিয়েছেন, চাকরি থাকা না থাকা বড় কথা নয়। সামাজিক ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকারি আধিকারিকদেরও প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার থাকা উচিত, সেই দাবিতেই লড়ে যাবেন তিনি।
গত কয়েক বছর ধরেই সরকার বনাম আমলা সংঘাত চরমে উঠেছে। ২০১৬ সালেই মধ্যপ্রদেশের অজয় সিংহ গাঙ্গোয়ারকে বদলি করা হয়েছিল। ফেসবুকে জওহরলাল নেহরুর প্রশংসা করা ছিল তাঁর ‘অপরাধ’। এ বছরই সরকারের কুনজরে পড়েছিলেন বেরিলি-র জেলাশাসক রাঘবেন্দ্র বিক্রম সিংহ। দাঙ্গা বাধানোর জন্য হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনগুলিকে অভিযুক্ত করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি। সেই তালিকাতেই নতুন সংযোজন কাশ্মীরের শাহ ফয়জল।