ধৃত সেই জওয়ান জিতেন্দ্র মালিক ওরফে জীতু ফৌজি।
বুলন্দশহরের পুলিশ অফিসার সুবোধ কুমার সিংহের খুনে জড়িত সন্দেহে অবশেষে গ্রেফতার করা হল সেনা জওয়ান জিতেন্দ্র মালিক ওরফে জীতু ফৌজিকে। শুক্রবার রাতেই তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় সেনা। জীতুকে বুলন্দশহরে নিয়ে আসার বন্দোবস্ত করছে পুলিশ।
সুবোধ কুমারের হত্যাকারী কে, এই প্রশ্ন নিয়ে যখন তোলপাড় হচ্ছে গোটা উত্তরপ্রদেশ তখনই সামনে আসে সে দিনের হিংসার একটি ভিডিয়ো। সেই ভিডিয়োয় সেনার উর্দি পরা এক ব্যক্তিকে দেখা যায়। সেই ভিডিয়ো খতিয়ে দেখার পর পুলিশের সন্দেহ জাগে ওই ব্যক্তির উপর। খোঁজ চালিয়ে তাঁর নাম উঠে আসে। কিন্তু তত ক্ষণে জীতু শ্রীনগরে চলে গিয়েছিলেন। জীতু যেখানে পোস্টিং ছিলেন সেখানে সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাজ্য পুলিশ।
বৃহস্পতিবারেই বুলন্দশহর থেকে পুলিশের একটি বিশেষ দল সোপোরে পৌঁছয়। আটক করা হয় জীতুকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। মেরঠ পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক অভিষেক সিংহ বলেন, “শুক্রবার রাতে জীতুকে আটক করা হয়। রাত পৌনে ১টা নাগাদ পুলিশের হাতে জীতুকে তুলে দেয় সেনা। তার পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।”
আরও পড়ুন: মঞ্চে উঠে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে সপাটে চড়, হামলাকারীকে বেধড়ক মার অনুগামীদের
জীতু রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ান। পোস্টিং শ্রীনগরে। তাঁর বাড়ি বুলন্দশহরেই। ঘটনার কয়েক দিন আগেই ১৫ দিনের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, যে দিন হিংসা ছড়ায় বুলন্দশহরে সে দিনই সোপোরে পালিয়ে যান তিনি।
৩ ডিসেম্বর হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল বুলন্দশহরে।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের আরও এক শীর্ষ আধিকারিক আনন্দ কুমার জানান, ঘটনার দিন জনতাকে উত্তেজিত করতে দেখা যায় জীতুকে। পুলিশকে লক্ষ্য করে যে পাথর ছোড়া হয়েছিল, সে ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ভিডিয়োতে তাঁকে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। ঘটনার সময় তিনি ওখানেই ছিলেন।
কেন সে দিন জনতাকে উস্কাচ্ছিলেন জীতু, আপাতত সেই উত্তরের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি আরও একটা সম্ভাবনার দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনার সঙ্গে আকলাখ হত্যার কোনও যোগ আছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও। ২০১৫ সালের এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন সুবোধ। এ রকমই বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পুলিশকে। এই ঘটনার আরও এক মূল অভিযুক্ত বজরং দলের সদস্য যোগেশ রাজকেও হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। সে দিনের বেশ কয়েকটি ছবি ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে এসে পৌঁছেছে। পুলিশের দাবি, সেই ছবিতে যোগেশের সঙ্গে জীতুকে দেখা গিয়েছে। পুলিশের সন্দেহটা গাঢ় হয়েছে এখান থেকেই।
আরও পড়ুন: সার্জিকাল-মন্তব্যে ফের শুরু বিতর্ক
একটা গুজবের জেরে গত ৩ ডিসেম্বর জ্বলে উঠেছিল বুলন্দশহর। পুলিশ অফিসার সুবোধ কুমার সিংহ দলবল নিয়ে সেখানে ছুটে যান। পুলিশকে দেখেই তেড়ে আসে উত্তেজিত জনতা। তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। ভিড়ের মধ্যেই থেকেই গুলি এসে লাগে সুবোধ কুমারের মাথায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। সেই অবস্থাতেই অনেক ক্ষণ পড়ে থাকেন। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।