প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মোষ কার? দুই ব্যক্তির মধ্যে যখন মোষের মালিকানা নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে, সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে পঞ্চায়েত। কিন্তু দু’পক্ষের দাবি, পাল্টা দাবির মধ্যে বিষয়টি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। ফলে মোষের আসল মালিক কে, তা চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয় তারা। শেষমেশ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, পুলিশকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
মোষটি দিন কয়েক আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। অন্য গ্রামে গিয়ে ঘোরাঘুরি করছিল। নিজের মোষকে ওই গ্রামে দেখতে পেয়ে সেটিকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য উদ্যোগী হতেই গোল বাধে। ওই গ্রামের এক ব্যক্তি দাবি করে বসেন, মোষটি তাঁর। ফলে মোষের মালিকানা নিয়ে শুরু হয় বচসা। সেটি ক্রমে বাড়তে থাকলে পঞ্চায়েতকে হস্তক্ষেপ করতে হয় সমস্যা সমাধানের জন্য। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ের।
প্রতাপগড়ের রাই আসকারানপুর গ্রামের বাসিন্দা নন্দলাল সরোজ। তাঁর অভিযোগ, দিন কয়েক আগে তাঁর পোষ্যটি নিখোঁজ হয়ে যায়। পাশেরই গ্রাম পুরে হরিকেশে মোষটিকে দেখতে পাওয়া যায়। পোষ্যের খোঁজ পেতেই সেই গ্রামে হাজির হয়েছিলেন নন্দলাল। কিন্তু মোষটিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে গিয়ে হনুমান সরোজ নামে এক ব্যক্তির বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁকে। হনুমান পাল্টা দাবি করেন ওই মোষ তাঁর। ফলে মোষ কার, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় নন্দলাল এবং হনুমানের মধ্যে। তার পর নন্দলাল মহেশগঞ্জ থানায় হনুমানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, অন্যায় ভাবে তাঁর পোষ্যকে নিজের বলে দাবি করে আটকে রেখেছেন হনুমান। বৃহস্পতিবার পুলিশ দু’পক্ষকেই ডাকে। খবর পাঠানো হয় পঞ্চায়েত প্রধানকেও। পঞ্চায়েতকে মোষের আসল মালিক চিহ্নিত করার ভার দেয় পুলিশ।
তার পরই মোষের মালিককে চিহ্নিত করতে একটি সভার আয়োজন করে পঞ্চায়েত। সাত ঘণ্টা ধরে টানাপড়েন চলে। ফলে আসল মালিক কে, তা খুঁজে বার করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয় পঞ্চায়েতকে। শেষমেশ বিষয়টি আবার পুলিশের কাছেই যায়। মহেশগঞ্জ থানার এসএইচও শ্রবণ কুমার সিংহ তখন একটি কৌশল বার করেন। দু’পক্ষ যখন মোষটিকে নিজের বলে দাবি করছে, তখন প্রাণীটিকেই তার আসল মালিককে খুঁজে বার করার ‘ভার’ দেন তিনি। মোষটিকে ছেড়ে দিতে বলেন এসএইচও। কী হচ্ছে, কী হতে চলেছে, কেনই বা মোষটিকে ছেড়ে দিতে বলা হল, এই নিয়ে যখন কৌতূহল তুঙ্গে, অফিসার তখন বলেন, “মোষটি যাঁর পিছু পিছু যাবে তাঁকেই মোষের মালিক বলে ঘোষণা করা হবে।” গ্রামবাসীরাও এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। থানা থেকে মোষটি ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রাণীটি তখন রাই আসকারানপুর গ্রামের দিকে হাঁটা শুরু করে। শুধু তাই-ই নয়, নন্দলালের বাড়িতে গিয়ে ওঠে সেটি। আর এ ভাবেই মোষের আসল মালিককে চিহ্নিত করা হয়। পুলিশের এই কৌশলে উল্লাসে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা।