সেবি-প্রধান মাধবী পুরী বুচ। — ফাইল চিত্র।
আদানি-হিন্ডেনবার্গ বিতর্কের মাঝেই রবিবার সেবি-প্রধান মাধবী পুরী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ জানালেন, হিন্ডেনবার্গের আসল উদ্দেশ্য তাঁদের ‘চরিত্রহনন’ করে সেবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা। আমেরিকান সংস্থার তোলা অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার বিকালে একটি দীর্ঘ বিবৃতির আকারে নিজেদের জবাব প্রকাশ্যে এনেছেন তাঁরা।
সংবাদসংস্থা এএনআই প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে উল্লিখিত তহবিলে বিনিয়োগ করা হয়েছিল ২০১৫ সালে। তখন মাধবী ও ধবল দু’জনেই সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা ছিলেন। তখনও মাধবী সেবিতে যোগ দেননি। এর প্রায় দু’বছর পরে পাকাপাকি ভাবে সেবিতে আসেন তিনি।’’ ওই বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়েছে, ওই তহবিলের মুখ্য বিনিয়োগ কর্মকর্তা অনিল আহুজা ছিলেন ধবলের ছোটবেলার বন্ধু। এ ছাড়াও অনিল দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সিটিব্যাঙ্ক, জেপি মরগান, থ্রিআই গ্রুপের মতো সংস্থাগুলির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। তাই চোখ বন্ধ করে অনিলের কথামতো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন বুচ দম্পতি। অনিলও নিশ্চিত করেছেন, উল্লিখিত তহবিলটি আদৌ কখনও আদানি গ্রুপের কোনও বন্ড, ইকুইটি কিংবা অন্য কোনও ধরনের বিনিয়োগের সঙ্গে যুক্ত ছিল না।
বিবৃতির শেষে তাঁরা লিখেছেন, ‘‘হিন্ডেনবার্গকে আগেও ভারতের বিভিন্ন নিয়মনীতি ভাঙার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে, পাঠানো হয়েছে একাধিক শোকজ় নোটিসও। এটাই দুর্ভাগ্য যে, শোকজ় নোটিসের উত্তর দেওয়ার বদলে তারা এখন সেবি-প্রধানের চরিত্রহনন করতে মাঠে নেমে পড়েছে, এমনকি প্রশ্ন তুলেছে সেবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও!’’
প্রসঙ্গত, শনিবারই আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির প্রধানের যোগসূত্র নিয়ে বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। হিন্ডেনবার্গ শনিবার নিজেদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখে, “আদানিরা বিদেশে যে টাকা সরিয়েছেন, তাতে অংশীদারি রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সেবির প্রধানের।” হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে দাবি করা হয়, গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানির বিদেশে থাকা সংস্থায় অংশীদারি রয়েছে সেবি প্রধান মাধবী পুরী বুচ ও তাঁর স্বামী ধবল বুচের। ২০১৭ সালে সেবিতে যোগ দেন মাধবী। রিপোর্টে এ-ও দাবি করা হয়, ঠিক সেই সময়েই সম্ভাব্য নজরদারি এড়াতে মাধবীর নামে থাকা সমস্ত বিদেশি বিনিয়োগ নিজের নামে করে নেন তাঁর স্বামী।
রিপোর্টটি প্রকাশ্যে আসতেই কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলগুলিও। কংগ্রেসের তরফে বিষয়টিকে সরাসরি ‘স্বার্থের সংঘাত’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। তাদের দাবি, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারে অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে অনতিবিলম্বে সব স্বার্থের সংঘাতকে নির্মূল করুক কেন্দ্র। সরব হয়েছে তৃণমূল, উদ্ধবপন্থী শিবসেনার মতো ‘ইন্ডিয়া’য় অন্য দলগুলিও।