গুজরাতের বডোদরায় বসানো বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি। বল্লভভাই পটেলের এই মূর্তি নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ছবি: রয়টার্স।
ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে বল্লভভাই পটেলের মূর্তি বসিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। গুজরাতের বডোদরায় বসানো বিশ্বের সর্বোচ্চ সেই মূর্তির খরচ নিয়ে বিতর্ক ছড়াল ব্রিটেনেও। সেখানকার সংবাদমাধ্যম ও এমপিদের একাংশের দাবি, বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ব্রিটেনের থেকে বিরাট অঙ্কের অর্থসাহায্য নিয়ে, সেই টাকা ঘুরপথে মূর্তি বানানোয় খরচ করেছেন মোদী। ব্রিটেনের করদাতাদের অর্থ এ ভাবে কেন খরচ হল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। মূর্তি-রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দেশের বিরোধী দলগুলিও।
ব্রিটেনের একটি প্রথম সারির সংবাদপত্রে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, ৫৬ মাস ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি গড়ার কাজ হয়েছে। ওই বছরগুলিতে ব্রিটিশ করদাতারা ভারতকে প্রায় ১১৭ কোটি পাউন্ড (প্রায় ১১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা) অর্থসাহায্য করেছেন। সংবাদপত্রটির দাবি, ২০১২ সালে মূর্তি তৈরির কাজ শুরুর বছরে ৩০ কোটি পাউন্ড আর্থিক অনুদান দেয় ব্রিটেন। তার পরের তিন বছরে দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ২৬ কোটি, ২৮ কোটি ও ১৮.৫ কোটি পাউন্ড। অনুদানের টাকা মূর্তি তৈরিতে সরাসরি খরচ হয়নি ঠিকই, কিন্তু এক হাতে সাহায্য নিয়ে অন্য হাতে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি গড়েছে ভারত।
আরও পড়ুন: মন্দির চাই, তবে তারও আগে মোদীকে চাই, বলছে সন্ত সমিতি
ব্রিটিশ এমপি পিটার বোন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ভারত আর্থিক অনুদান নিচ্ছে। আবার বিরাট অঙ্কের অর্থ খরচ করছে মূর্তি গড়ে তুলতে। এটা নির্বুদ্ধিতা ছাড়া কিছু নয়।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই ঘটনা বুঝিয়ে দিচ্ছে, ভারতকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রয়োজন নেই। অর্থ কী ভাবে খরচ করবে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার, কিন্তু এত বড় মূর্তি যদি তারা বানাতে পারে, তা হলে এটা স্পষ্ট যে ওদের সাহায্যের কোনও প্রয়োজন নেই।’’
আরও পড়ুন: ‘চূড়ান্ত সময়সীমা’ দিল আরএসএস, রামের চাপে নাকাল মোদী
আরও পড়ুন: সফর শান্তিতেই, পরিজনদের নিয়ে দিল্লিও যাবে তৃণমূল
দেশেও কম সমালোচনা হচ্ছে না মোদীর মূর্তি-রাজনীতির। সরব হয়েছেন কংগ্রেসের শশী তারুর ও সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিরা। তবে ব্রিটিশ এমপিদের সমালোচনার প্রসঙ্গে তাঁদের স্পষ্ট কথা, ভারত কোন টাকা কোথায় খরচ করবে, তাতে ব্রিটেনের নাক গলানো মেনে নেওয়া যায় না। এ নিয়ে যা বলার ভারতের মানুষই তা বলতে পারেন। তবে একসুরে তাঁদের বক্তব্য, কোন বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে, তা বোঝা উচিত প্রধানমন্ত্রীর। গরিবির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বদলে মূর্তি গড়ে তিনি রাজনীতির ফায়দা নিতে ছুটছেন।