বম্বে হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের দুই শহর ঔরঙ্গাবাদ এবং ওসমানাবাদের নাম পরিবর্তন করা বেআইনি নয়। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এমনটাই জানাল বম্বে হাই কোর্ট। এই দুই শহরের নাম পরিবর্তন করা হয়েছিল উদ্ধব ঠাকরের সরকারের আমলে। পরে একনাথ শিন্ডে সরকারও সেই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। ঔরঙ্গাবাদের নাম পরিবর্তন করে হয় ছত্রপতি শম্ভজিনগর এবং ওসমানাবাদের পরিবর্তিত নাম হয় ধারাশিব। শহরের নাম পরিবর্তনের বিরোধিতা করে একাধিক মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে।
সম্প্রতি বম্বে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিকে উপাধ্যায় এবং বিচারপতি আরিফ ডক্টরের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ঔরঙ্গাবাদ এবং ওসমানাবাদের নাম পরিবর্তন করার যে সিদ্ধান্ত মহারাষ্ট্র সরকার নিয়েছে, তা বেআইনি নয়। আদালতের মন্তব্য, ‘‘আমরা নিঃসঙ্কোচে জানাচ্ছি, শহরের নাম পরিবর্তন করে যে বিজ্ঞপ্তিগুলি মহারাষ্ট্র সরকার প্রকাশ করেছিল, তা বেআইনি নয়। তাতে আইনের কোনও ত্রুটিও নেই।’’
উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্রের এমভিএ সরকার ২০২১ সালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঔরঙ্গাবাদ এবং ওসমানাবাদের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ২০২২ সালে শিন্ডে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সরকারও নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত জারি রাখে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কিছু মামলা করা হয়েছিল।
মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, ২০০১ সালে মহারাষ্ট্র সরকার ঔরঙ্গাবাদের নাম পরিবর্তনের প্রচেষ্টা বাতিল করে দিয়েছিল। পরে ঠাকরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রসঙ্গ আবার উত্থাপন করেন। অভিযোগ, বেআইনি ভাবে রাজনৈতিক ফয়দা তোলার জন্য তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুই শহরের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্ত ভারতীয় সংবিধানের বিরোধী বলেও জানান মামলাকারীরা।
মামলাকারীদের আরও বক্তব্য, ওসমানাবাদের নাম পরিবর্তন করে ধারাশিব রাখলে এলাকায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি হতে পারে। বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধতে পারে। ১৯৯৮ সালে এক বার ওসমানাবাদের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। সেই তথ্যও আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়েছিল।
শুনানিতে রাজ্যের তরফে বলা হয়, নাম পরিবর্তনের ফলে শহরের কোথাও কোনও গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা হয়নি। সাম্প্রদায়িক অশান্তিও হয়নি। এমনকি, রাজ্যের তরফে এ-ও বলা হয়, নাম পরিবর্তনের পর ওসমানাবাদের অধিকাংশ মানুষ তা উদ্যাপন করেছিলেন। নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও মানতে চায়নি সরকার। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত জানিয়েছে, নাম পরিবর্তন বেআইনি নয়।