বম্বে হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। —ফাইল চিত্র।
মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে সঙ্ঘাত নতুন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু দু’তরফের জীবনের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। তারা এই কর্তব্য থেকে সরে আসতে পারে না। সোমবার একটি মামলায় মহারাষ্ট্র সরকারকে ভর্ৎসনা করে এমনই কথা বলল বম্বে হাই কোর্ট। পাশাপাশি ওই মামলায় এক বিধবাকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
বছর তিনেক আগে বুনো শুয়োরের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ, এ নিয়ে সরকার কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। কোনও ক্ষতিপূরণও দেয়নি। সোমবার ওই মামলার শুনানিতে বম্বে হাই কোর্টের প্রবল ভর্ৎসনার মুখে পড়ে মহারাষ্ট্র সরকার। পাশাপাশি আদালত মনে করিয়ে দেয় জীবনের অধিকার রক্ষা করার গুরুদায়িত্ব রয়েছে সরকারের কাঁধে। বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি গৌতম পটেল এবং গৌরি গডসের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘‘সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের মনে রাখা দরকার বন্যপ্রাণীর জীবন রক্ষা করতে হবে। তবে এ-ও খেয়াল রাখতে হবে যে, নির্দিষ্ট অঞ্চলের বাইরে যেন তারা বেরিয়ে না আসে। লোকালয়ে এসে কোনও মানুষের জীবনহানি না করে। দুই তরফের জীবনের অধিকারই রক্ষা করতে হবে সরকারকে।’’
আদালতে ওই বিধবার আইনজীবী সওয়াল করেন, সরকারের সংকল্প (জিআর) অনুযায়ী, বন্যপ্রাণীর আক্রমণে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তির পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাঁর মক্কেল গত ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। পরে আবার এ নিয়ে আবেদন করা হয়েছে।
কিন্তু সরকার বা প্রশাসনের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। আদালত দেখে, ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকারের কোনও ‘জিআর নোট’ নেই। এর পর আদালত জানায়, সরকার তার দায় এড়াতে পারে না। বন্যপ্রাণীর দ্বারা এক জন মানুষের জীবনহানি হয়েছে। কিন্তু তার পরে সরকার পক্ষের এমন আচরণ অবৈধ এবং অন্যায়। হাই কোর্ট বলে, ‘‘বন্যপ্রাণী যদি কোনও ব্যক্তির ক্ষতি করে, তবে সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, তাঁর জীবনের অধিকার নিশ্চিত করতে না পারার ব্যর্থতা বর্তায় সরকারের উপরে।’’ পাশাপাশি আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে বন্যপ্রাণীর জীবনরক্ষার বিষয়টিও।