রেলস্টেশনে এই ড্রাম থেকেই এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে। ফাইল চিত্র।
তিন খুন। ধরন এক। দেহ ফেলে আসার ধরনও এক। বেঙ্গালুরুতে পর পর তিন মহিলার খুনে ‘সিরিয়াল কিলার’-এর তত্ত্ব জোরালো হচ্ছে। আর তা নিয়ে কর্নাটকের রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। এই তিন ঘটনা ‘সিরিয়াল কিলিং’-এর তত্ত্ব উস্কে দিয়ে রাজ্যের বিজেপি সরকারের ভূমিকাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। সামনেই নির্বাচন, তার আগে বেঙ্গালুরুতে চার মাসের মধ্যে তিন মহিলার খুনের ঘটনায় প্রশাসনকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে তারা।
ঘটনা ১: গত সোমবার বেঙ্গালুরুর বাইয়াপানাহল্লি স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে প্লাস্টিকের ড্রামের ভিতরে এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। ড্রামের মুখ জামাকাপড় দিয়ে ঠাসা ছিল। তার নীচেই ছিল মহিলার দেহ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মৃত ওই মহিলা নাম তামান্না। বিহারের আরারিয়ার বাসিন্দা। স্বামী আফরোজ়কে ছেড়ে এক আত্মীয় ইন্তিখাবের সঙ্গে পালিয়ে এসে বেঙ্গালুরুতে থাকছিলেন। তাঁকে খুনের অভিযোগ উঠেছে দেওর কামালের বিরুদ্ধে। গত ১২ মার্চ তামান্নাকে খুন করার পর তাঁর দেহ প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে বাইয়াপানাহল্লি স্টেশনে ফেলে রেখে আসেন। তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরও পাঁচ জনকে খুঁজছে তারা।
ঘটনা ২: গত ৪ জানুয়ারি বেঙ্গালুরুর যশবন্তপুর রেলস্টেশনের একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে প্লাস্টিকের ড্রামের ভিতরে এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই ড্রামের মুখও জামাকাপড় দিয়ে এমন ভাবে ঢাকা ছিল যে, বোঝার উপায় ছিল না। স্টেশনের এক সাফাইকর্মী ড্রামটিকে পড়ে থাকতে দেখে রেলপুলিশকে খবর দেন। তার পরই ড্রামের ভিতর থেকে এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। মহিলার পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ।
ঘটনা ৩: গত ৬ ডিসেম্বর বেঙ্গালুরুতেই একটি ট্রেনে প্লাস্টিকের ড্রামের ভিতর থেকে এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। এ ক্ষেত্রেই মহিলার পরিচয় জানা যায়নি।
ডিসেম্বর থেকে মার্চ— এই ৪ মাসে শহরে তিন মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ‘সিরিয়াল কিলিং’-এর গন্ধ পাচ্ছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা টুইট করেন, “বেঙ্গালুরুবাসী, তারিখগুলি মনে রাখুন। ৩ মহিলার দেহ ড্রাম থেকে উদ্ধার হয়েছে রেলস্টেশনে। রাজ্যের আইশৃঙ্খলা ব্যর্থ। সিরিয়াল কিলিং।” তবে এই ঘটনাগুলিকে ‘সিরিয়াল কিলিং’ বলে মানতে রাজি নয় পুলিশ। তাদের দাবি, ‘সিরিয়াল কিলিং’-এর কোনও যোগসূত্র পাওয়া যায়নি এই তিন ঘটনার মধ্যে।