রাঁচীতে হামলার মুখে স্বামী অগ্নিবেশ। ছবি: পিটিআই।
রাঁচীতে বিজেপি যুব মোর্চা কর্মী-সদস্যদের হাতে আক্রান্ত হলেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা সমাজসেবী স্বামী অগ্নিবেশ। মারধর, কিল-চড়, লাথি-ঘুষি, এমনকি, তাঁকে লক্ষ করে পাথর ছোড়ারও অভিযোগ উঠল। যুব মোর্চা ছাড়াও আরএসএস এবং ভিএইচপি সদস্যরাও এতে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও এই ঘটনায় দলের যুব শাখার কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনার পূর্ণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস।
মঙ্গলবার রাঁচী থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকুরে একটি সম্মেলনে উপস্থিত থাকার কথা ছিল স্বামী অগ্নিবেশের। রাঁচীতে তিনি যে হোটেলে উঠেছিলেন, এ দিন তার বাইরে জমায়েত হন যুব মোর্চা, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-এর কর্মী-সদস্যেরা।
স্বামী অগ্নিবেশকে ওই সম্মেলনে নিয়ে যেতে হোটেলের বাইরে তির-ধনুক নিয়ে হাজির ছিলেন অসংখ্য আদিবাসী। তিনি হোটেলের বাইরে বার হলে তাঁকে কালো পতাকা দেখান বিজেপি যুব মোর্চার কর্মী-সদস্যেরা। সেখানেই তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে এক দল। এর পর আচমকাই স্বামী অগ্নিবেশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন অনেকে। অভিযোগ, তাঁকে লক্ষ করে চলতে থাকে এলোপাথাড়ি মারধর। ভিড়ের মধ্যে থেকে একটি পাথরও উড়ে আসে তাঁর দিকে। অল্পের জন্য বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান তিনি। যদিও পাথরটি তাঁর পাজরে এসে আঘাত করে। এর পর তাঁকে উদ্ধার করে সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, পাথরের আঘাত গুরুতর না হলেও তাতে চোট পেয়েছেন স্বামী অগ্নিবেশ।
ঘটনার পর স্বামী অগ্নিবেশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি: পিটিআই।
ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক ৮০ বছরের সমাজকর্মী বলেন, “আমি সমস্ত রকম হিংসার বিরুদ্ধে। শান্তিপ্রিয় মানুষ হিসেবে আমাকে সকলে জানেন। জানি না, কেন আমার উপর এই হামলা চলল।” তাঁর অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড পুলিশকে আগে থেকেই তাঁর নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করলেও তাতে কর্ণপাত করেনি রাজ্য প্রশাসন। তিনি বলেন, “বিক্ষোভকারীদের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে সাড়া মেলেনি। আদিবাসী বন্ধুদের সঙ্গে আমি সম্মেলনে যাচ্ছিলাম। সে সময়েই আমার উপর হামলা হয়। ওরা কালো পতাকা ধরে ছিলেন। আমাকে মাটিতে ফেলে লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। এমনকি, অকথ্য ভাষাও ব্যবহার করেন। হাতজোড় করে অনুরোধ করলেও কেন আমাকে মারধর করা হল তা বলতে চাননি তাঁরা।”
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করলেও রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র পি শাদেও কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি।
তিনি বলেন, “গণতন্ত্রে হিংসার কোনও স্থান নেই। স্বামী অগ্নিবেশ তাঁর নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা করলে পারতেন।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, “এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও কর্মী-সদস্য জড়িত নন। এর নিন্দা করছি। তবে স্বামী অগ্নিবেশের যা রেকর্ড তাতে এমন হওয়াটা আশ্চর্যের নয়। ধর্মান্তরণের জন্য সম্প্রতি শিরোনামে উঠে এসেছিল পাকুর।”