কেজরীর সরকারি বাসভবন। — ফাইল চিত্র।
দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালের বিলাসবহুল ‘শিসমহল’-এর অন্দরসজ্জা ঘুরে দেখানো হবে সাংবাদিকদের। ‘গাইড’ হিসাবে থাকবেন খোদ বিজেপি নেতা! শিসমহল-বিতর্ক প্রসঙ্গে দিল্লিতে ক্ষমতায় ফেরার কয়েক সপ্তাহের মাথায় কেজরীকে বিঁধে এমনটাই জানাল বিজেপি।
এ বারের নির্বাচনে কেজরীকে ভোটে হারানো বিজেপি নেতা প্রবেশ বর্মা সোমবার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘পূর্ববর্তী আপ সরকার কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বিলাসবহুল জীবনযাপনের খরচ জোগাতে করদাতাদের অর্থ নয়ছয় করেছে, তা সবার জানা উচিত। আমি নিজে সাংবাদিকদের বাংলোর ভিতরে নিয়ে যাব।’’ অন্য দিকে, দিল্লি বিজেপির প্রধান বীরেন্দ্র সচদেবের অভিযোগ, বাসভবন সংলগ্ন প্রায় ৫০ হাজার বর্গমিটার বিস্তৃত জমিকে কমপ্লেক্সে পরিণত করার জন্য চারটি সরকারি সম্পত্তি একত্রিত করা হয়েছে। এই সংযুক্তি বাতিল করতে ইতিমধ্যেই দিল্লির উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনাকে চিঠিও লিখেছেন বীরেন্দ্র।
দিল্লির সিভিল লাইন্সের ফ্ল্যাগস্টাফ রোডের এই বাংলোটি ভোটপর্বেও নিয়মিত চর্চায় থেকেছে। এক সময় দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীর নিবাস ছিল এখানেই। নির্বাচনের আগে বিপুল অর্থ খরচ করে সংস্কারের অভিযোগে বিলাসবহুল এই বাংলোটি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছিল। কেজরীর বাংলোকে ‘শিসমহল’ বলে কটাক্ষ করে ভোটপ্রচারপর্বে আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণ শানিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। নানা মহলে কটাক্ষের মুখে পড়েছিল নিজেকে ‘আম আদমি’ (সাধারণ মানুষ) বলে দাবি করা কেজরীওয়ালের বিলাসবহুল জীবনযাপন। উল্লেখ্য, দুর্নীতিবিরোধী ভাবমূর্তি নিয়ে মাত্র এক দশক আগে রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন কেজরীওয়াল। এ হেন নেতার বিরুদ্ধে এই ‘শিসমহল’কে ব্যবহার করেই পাল্টা দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন বিরোধীরা। কেজরীকে খোঁচা দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার আগে উনি (কেজরীওয়াল) বলেছিলেন সরকারি বাংলো পর্যন্ত নেবেন না। আর ক্ষমতায় এসে নিজের সরকারি আবাস সাজাতে বিপুল অর্থ নয়ছয় করেছেন।’’ রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘‘কেজরীওয়াল ছোট একটা গাড়িতে চড়ে এসেছিলেন। কিন্তু তার পর থাকতেন শিশমহলে!’’
অভিযোগ উঠেছিল, বিপুল অঙ্কের সরকারি টাকা খরচ করে নিজের বাসভবনের সংস্কার করিয়েছেন কেজরী। নানা মহলে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল, সংস্কার বাবদ নাকি খরচ হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা! তবে দিল্লিতে আপ সরকারের পতনের পর ‘শিশমহলের’ ভবিষ্যৎ নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। বিজেপির নতুন মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত কেজরীর সাজানো ‘শিশমহল’-এ থাকবেন কি না, তা নিয়েও জল্পনা হয়েছে।