নানকানা-হামলার ফায়দা তুলতে মরিয়া বিজেপি

দলের বক্তব্য, গুরু নানকের জন্মস্থানে হামলা বুঝিয়েছে, প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলিতে সে দেশের সংখ্যালঘুরা কী ধরনের উৎপীড়নের শিকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০২:২৯
Share:

নয়াদিল্লিতে পাক হাইকমিশনের কার্যালয়ের বাইরে বিজেপির প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।

মুখে স্বীকার না করলেও দেশ জুড়ে নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ঘিরে প্রতিবাদ-আন্দোলনে কোণঠাসা শাসক শিবির। ধর্মের ভিত্তিতে আনা ওই আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে দেশের অন্দরে তো বটেই, বিদেশেও সমালোচনার ঝড় বইছে। এই আবহে গত কাল পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের নানকানা সাহিব গুরুদ্বারে হামলার ঘটনা থেকে ফায়দা তুলতে আসরে নামল বিজেপি। দলের বক্তব্য, গুরু নানকের জন্মস্থানে হামলা বুঝিয়েছে, প্রতিবেশী মুসলিম দেশগুলিতে সে দেশের সংখ্যালঘুরা কী ধরনের উৎপীড়নের শিকার। তাই প্রতিবেশী তিন দেশে ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার শরণার্থীদের কথা ভেবে নয়া আইন করা হয়েছে।

Advertisement

সংসদে সিএএ আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই পথে নেমেছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, মূলত মুসলিমদের নিশানা করতেই ওই আইন। অন্য দিকে সরকারের যুক্তি, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে আসা অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে ওই বিলটি আনা হয়েছে। সরকারের দাবি উড়িয়ে বিরোধীরা বলছেন, প্রথমে সিএএ পরে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এনে মুসলমানদের এ দেশে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা।

নানকানা সাহিবে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেত্রী মীনাক্ষি লেখি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার পর থেকে গত ৭০ বছরে পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সমাজের ৯৫ শতাংশ মানুষ স্রেফ গায়েব হয়ে গিয়েছেন। তাঁরা হয় ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছেন, না হলে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। গত কালের ঘটনা হল সিনেমার ট্রেলার। যা ৭০ বছর ধরে চালু রয়েছে পাকিস্তানে।’’ সিএএ-র সমর্থনে বিজেপির যুক্তি, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে আসা অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে ওই আইনটির প্রয়োজনীয়তা এ বার অন্তত বোঝা উচিত বিরোধীদের।

Advertisement

গত কালের ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে ইমরান খানের সরকার। আজ পরিস্থিতি শান্ত হলেও শিখ সম্প্রদায়ের নগর পরিক্রমার পরিকল্পনা বাতিল করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন।

নানকানায় হামলার দীর্ঘক্ষণ পরেও রাহুল গাঁধী মুখ না খোলায় কংগ্রেসকে নিশানা করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরৎ কৌরের অভিযোগ, ‘‘রাহুলের এ নিয়ে মুখ না খোলা তাঁর শিখ-বিরোধী মনোভাবের প্রকাশ। কংগ্রেস নেতার পাকিস্তান নিয়ে মুখ খোলার সময় নেই।’’ ওই টুইটের এক ঘণ্টার মাথায় প্রথম সরব হন রাহুল। টুইটে বলেন, ‘‘ওই হামলার ঘটনা নিন্দনীয় এবং দ্ব্যর্থহীন ভাবে এর নিন্দা করা উচিত। ধর্মান্ধতা অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং এই বিষ সীমান্ত মানে না। ভালবাসা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার মিশেলই হল এর একমাত্র ওষুধ।’’ পরে রাতে বিবৃতি দিয়ে ঘটনার নিন্দা করেন সনিয়া গাঁধীও। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘটনাটি জানতে পেরেই সনিয়া গাঁধী প্রশাসনিক স্তরে ফোন করে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র যাতে পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলেন, সেই অনুরোধ করেছিলেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement