সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের আগেই বিরোধী জোটকে আরও দুর্বল করতে বিজেপির কোপ পড়ল নবীন পট্টনায়কের উপর। তাঁর সরকারের কারিগরি উপদেষ্টার পদ থেকে স্যাম পিত্রোদাকে সরানোর দাবিতে রাস্তায় নামল বিজেপি। তাদের বক্তব্য, সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর পাশাপাশি পিত্রোদাও ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় অভিযুক্ত। নবীনের বিজেডি-র সঙ্গে কংগ্রেসের অশুভ আঁতাঁত রয়েছে, জনগণের পক্ষে যা মোটেই ভাল নয়।
হঠাৎ করে নবীনকে এ ভাবে নিশানা করার পিছনে রাজনীতির অঙ্কটি স্পষ্ট। এনডিএ শরিকদের বাইরে টিআরএস, জগন রেড্ডিদের সমর্থন পেয়ে বিজেপি এ বারে অনায়াসেই রাষ্ট্রপতি পদে নিজেদের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে পারবে। তবু নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা জয়ের মার্জিন আরও বাড়িয়ে নিয়ে বিরোধী জোটকে আরও দুর্বল করে দিতে চাইছেন। ক’দিন আগে সনিয়ার দূত হিসেবে সীতারাম ইয়েচুরি নবীনের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন।
মমতাও সম্প্রতি ভুবনেশ্বর সফরে গিয়ে দেখা করেছেন তাঁর সঙ্গে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নবীন যাতে বিজেপির সঙ্গেই থাকেন, তার জন্যই চাপ বাড়াতে শুরু করল মোদীর
দল। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় পিত্রোদার নাম আসার পরে বিজেপি এ দিন রাস্তায় নেমে তাঁর অপসারণের দাবি তুলল।
রাজীব গাঁধীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন পিত্রোদা। তখন থেকেই গাঁধী পরিবারের কাছের লোক বলে তিনি পরিচিত। নবীন সরকার তাঁকে কারিগরি উপদেষ্টা করে পূর্ণমন্ত্রীর সমতুল মর্যাদা দিয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, পিত্রোদা আসলে কংগ্রেস ও বিজেডির আঁতাঁতের দৃষ্টান্ত। ওড়িশার জন্য কিছুই করেননি স্যাম। উল্টে কংগ্রেসের দুর্নীতিকেও সমর্থন করছেন নবীন।
এর আগে ওড়িশার বিজেপি নেতা ও মোদী সরকারের মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘যে বিরোধী জোট হচ্ছে, সেটি দুর্নীতিগ্রস্তদের আখড়া। মমতা ও নবীন একই দুর্নীতিতে যুক্ত। দুই রাজ্যেই ভুয়ো আর্থিক লগ্নি সংস্থার মামলা চলছে।’’ সনিয়া-রাহুলের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল হেরাল্ড ও লালু-মায়াবাতীর মতো বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তেও সক্রিয় হয়েছে মোদী সরকার। মমতার দলের নেতাদের বিরুদ্ধেও তৎপর কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় আজ বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-র প্রার্থী বিপুল ভোটে জিতবে। বিরোধিতার জন্য কংগ্রেস-তৃণমূলের মতো কিছু দল জোট বাধতে চাইছে বটে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যে উন্নয়নের পথে হাঁটছেন, তাতে এনডিএ-র বাইরে দলগুলিও সমর্থনে এগিয়ে আসছে।’’