বিধানসভার ভোট শেষ হতেই অসমে সাংগঠনিক নির্বাচনে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি। এরই মধ্যে দিন-তারিখ চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। দলের রাজ্য রিটার্নিং অফিসার রাজদীপ রায় জানিয়েছেন, অসমে দলের ২৪ হাজার ৯০০টি বুথ রয়েছে। আগামী ২ জুন থেকে ২০ জুনের মধ্যে সমস্ত বুথ কমিটির সাংগঠনিক নির্বাচন সম্পন্ন হবে। ২১ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে গঠিত হবে ৩৮৪টি ব্লক কমিটি। এর পর জেলা ও রাজ্য কমিটির সাংগঠনিক নির্বাচন। সে জন্য ১ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময় স্থির করা হয়েছে। রাজদীপবাবু বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের আগেই সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। ফলে এখন আর অন্য কোনও জটিলতা নেই। নির্বিঘ্নেই ভোটপর্ব সম্পন্ন হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন পর্যায়ে দলের কর্মকর্তারা নির্বাচিত হবেন।’’
রাজদীপবাবু জটিলতা নেই বলে মন্তব্য করলেও এ বার সাংগঠনিক নির্বাচন নির্ঝঞ্ঝাট হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ এরই মধ্যে বিজেপি শাসকদলে পরিণত। ফলে সবাই চাইবেন পদের দৌলতে ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছতে। তার উপর দলত্যাগীদের জায়গা করে দেওয়ার ব্যাপার রয়েছে। এমনকী, বুথ কমিটি গঠনেই শুরু হবে দলাদলি। আগে বুথ পর্যায়ে নির্বাচনের প্রয়োজন পড়ত না। সব বুথে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়ার লোকও মিলত না। এ বার ভিন্ন চিত্র। ব্লক ও জেলা পর্যায়ে কাছাড়ের মতো বহু জায়গায় হুমকি-ধমকির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
রাজদীপবাবু অবশ্য এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না। তিনি আশাবাদী, কর্মীরা দলের মর্যাদার কথায় বিশেষ গুরুত্ব দেবেন। বরাকের নির্বাচকমণ্ডলী যে বিজেপির প্রতি আস্থা রেখেছেন, তিনি সে জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানান। বলেন, ‘‘আমরা কাজের মাধ্যমে এর উপযুক্ত সম্মান দেব। শুধু বিধায়করাই নন, পরাজিত প্রার্থীরাও নিজেদের এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন। জনপ্রতিনিধিদের উপর দলের নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যাপারেও কথাবার্তা চলছে।’’
রাজদীপ রায় রাজ্য কমিটিরও সাধারণ সম্পাদক। তবে মন্ত্রিসভা গঠন মুখ্যমন্ত্রী ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ব্যাপার বলে তিনি তাতে নাক গলাতে চান না। তবু পরিষদীয় সচিব বা সংসদীয় সচিব বলে যেন কোনও পদ সৃষ্টি করা না-হয়, সে জন্য সর্বানন্দ সোনোয়াল, হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে অনুরোধ করেছেন। তিনি প্রসঙ্গক্রমে জানিয়ে রাখেন এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলার কথাও। বিজেপির হয়ে মামলাটি করেছিলেন তাঁর প্রয়াত পিতা, বিজেপির সে সময়কার পরিষদীয় দলনেতা বিমলাংশু রায়।