নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
নিন্দুকেরা বলেন, প্রশ্নগুলো নাকি আগেভাগে সাজানো থাকে। প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন! তা-ও নিজের দলেরই কর্মীদের। নিজেরই কেন্দ্র বারাণসীতে। সেখানে পান থেকে চুন খসলেই শাস্তি।
আজ ভোট-ফলের দিন বারাণসীর কর্মীদের সামনে যখন ভিডিয়োতে দেখা দিলেন প্রধানমন্ত্রী, কর্মীরা মহারাষ্ট্র আর হরিয়ানার ‘বিজয়’-এর পুরো কৃতিত্বই দিলেন মোদীকে। সঙ্গে জুড়ে দিলেন একটি দাবি।
কী দাবি? এক কর্মী বললেন, ‘‘আমাদের দাবি, আপনি যেন কখনও অবসরের কথা না ভাবেন। যত দিন সুস্থ থাকবেন, প্রধানমন্ত্রী থাকুন।’’ চওড়া হাসি নিয়ে মোদী অনেক বার মাথা নাড়লেন। কোনও উত্তর দিলেন না। এই নিয়েই কিন্তু চড়ল জল্পনার পারদ। সেটি আরও জোরালো হল, কিছুক্ষণ পরেই আর এক কর্মী সর্দার পটেলের সঙ্গে মোদীর তুলনা টানায়। সেই কর্মী ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পুরো কৃতিত্বও দিলেন প্রধানমন্ত্রীকেই।
জল্পনা এতে আরও বাড়ল। কারণ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অমিত শাহের সঙ্গেই সর্দার পটেলের তুলনার ব্যাপারটা চলছিল। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের কৃতিত্বও জুটছিল অমিতেরই। আর মোদীর পর অমিতই প্রধানমন্ত্রী হবেন, এমন আলোচনাও কয়েক সপ্তাহ জুড়ে জোরালো হচ্ছিল। নানা মঞ্চে, সাক্ষাৎকারে সেই প্রশ্নের মুখোমুখিও হতে হচ্ছিল শাহকে। যার জবাবে পুরোটাই ‘পরিকল্পনামাফিক প্রচার’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন শাহ।
প্রশ্ন হল, এর আগে দলের কর্মীদের সঙ্গে যখন ভিডিয়ো মারফত কথা বলেছেন মোদী, একাধিক কর্মীই জানিয়েছিলেন তাঁদের প্রশ্ন আগেভাগে ‘সাজানো’ থাকে। এ বারেও কি তবে প্রশ্ন সাজানো ছিল? মোদীই কি তবে এই প্রশ্নগুলো শুনতে চাইছিলেন? ‘ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে অমিতকে ঘিরে প্রচারে কি রাশ টানতে চাইছিলেন? মোদী আর অমিতের মধ্যে কি চিড় তৈরি হচ্ছে?
এর উত্তর দেওয়ার লোক কোথায়? সন্ধ্যায় বিজেপি দফতরে ‘বিজয়’ উৎসবে অমিত কিন্তু মেলে ধরলেন ‘ব্র্যান্ড মোদী’কেই। গত পাঁচ মাসে মোদীর নেতৃত্বে কী করে দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে, ‘মোদী-টু’তে প্রথম ভোটে কী করে দুই রাজ্যে জয় হল, তা-ই বললেন বারবার। আর সঙ্গে একটা লাইন অবশ্যই জুড়লেন, ‘‘দীর্ঘ সময় ধরে আমরা নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেই ভারতমাতার সেবা করে যাব।’’