প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য লোকসভার মধ্যে বিজেপি নিশানা করল রাহুল গান্ধীকে। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে রাহুলের বিরুদ্ধে আমেরিকার ধনকুবের জর্জ সোরোসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সংসদে গন্ডগোল পাকানোর অভিযোগ তোলেন। বিজেপির দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে দলীয় সাংসদ সম্বিত পাত্র রাহুলকে ‘সবথেকে সেরা বিশ্বাসঘাতক’ ও ‘দেশদ্রোহী’ বলে আক্রমণ করলেন। লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে বিজেপির এ হেন আক্রমণের জেরে ফের লোকসভা অচল হয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, নিশিকান্তকে ক্ষমা চাইতে হবে। সম্বিতের বিরুদ্ধেও স্পিকার ওম বিড়লার কাছে কড়া পদক্ষেপের দাবি করেছে তারা।
শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম সপ্তাহে কংগ্রেস-সহ অধিকাংশ বিরোধী দল আদানি ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে তদন্তের দাবি তোলায় লোকসভা, রাজ্যসভা দুই-ই অচল ছিল। তবে চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে কংগ্রেস আদানি-কাণ্ড নিয়ে আলোচনার দাবিতে নোটিস দিলেও সংসদ অচল করেনি। তার বদলে রোজই সংসদের বাইরে বিক্ষোভ করেছে কংগ্রেস।
আজও রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার নেতৃত্বে বিরোধী সাংসদরা সংসদের বাইরে মানবশৃঙ্খল করে গোটা চত্বর প্রদক্ষিণ করেন। প্রত্যেকের পোশাকের পিছনে ছিল ‘মোদী আদানি এক হ্যায়, আদানি সেফ হ্যায়’ লেখা স্টিকার। প্রিয়ঙ্কা সকলের সঙ্গে হাততালি দিয়ে সুর করে স্লোগান তোলেন, ‘এয়ারপোর্ট দেখো, আদানি। বিজলি দেখো, আদানি। পোর্ট দেখো, আদানি’। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সমস্ত লজ্জা ত্যাগ করে আদানির দুর্নীতি আড়াল করছেন।’’ রাহুল বলেন, ‘‘মোদীজি আদানিজির বিরুদ্ধে তদন্ত করাতে পারবেন না। কারণ, তদন্ত করালে, তা ওঁর নিজের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে।”
এর পরেই লোকসভায় ‘জ়িরো আওয়ার’-এ বিজেপির নিশিকান্ত অভিযোগ তোলেন, ফরাসি সংবাদমাধ্যমের তদন্ত অনুযায়ী ওসিসিআরপি (অর্গানাইজ়ড ক্রাইম অ্যান্ড কোরাপশন রিপোর্টিং প্রোজেক্ট) আমেরিকার ধনকুবের জর্জ সোরোসের মদতে চলছে। আদানি, পেগাসাস, কোভিডের টিকা নিয়ে এই সংস্থার রিপোর্ট এলেই রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস সংসদ অচল করেছে। নিশিকান্তের ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিতে আজ কংগ্রেস অনড় থাকায় লোকসভা দিনের মতো মুলতুবি হয়ে যায়। বিজেপির সম্বিত রাহুলকে
‘সবথেকে সেরা বিশ্বাসঘাতক’ (ট্রেটর অব হায়েস্ট অর্ডার) বলেন।
লোকসভায় কংগ্রেসের গৌরব গগৈ বলেন, ‘‘বিজেপির মধ্যে আদানি গোষ্ঠীর স্লিপার সেল রয়েছে। যখনই রাহুল গান্ধী মোদী-আদানি আঁতাঁতের কথা বলেন, তখনই এই সব স্লিপার সেল সক্রিয় হয়ে ওঠে।’’