আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। হিন্দি বলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্যকে ‘পাখির চোখ’ করে পথে নেমে পড়েছে বিজেপি। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি উত্তরপ্রদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে আজ সাতটি ‘জন আর্শীবাদ’ যাত্রার সূচনা করল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দল। পথে নেমেছে বিজেপির শরিক আপনা দলও।
‘জন আশীর্বাদ’ যাত্রার উদ্দেশ্য সরকারের জনমুখী কাজগুলির সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যাঁরা সদ্য প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, এই তিন দিনের যাত্রার দায়িত্ব মূলত তাঁদেরই দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের পূর্ণমন্ত্রীরা ওই যাত্রায় যোগ দেবেন শেষ দিনে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, এক জন মন্ত্রী অন্তত তিন দিনে ৪০০-৫০০ কিলোমিটার সফর করবেন। গোটা দেশে ৩৯ জন মন্ত্রী প্রায় ২১২টি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তত ২০ হাজার কিলোমিটার এলাকায় সফর করবেন। বিজেপির নির্দেশ, রাজ্যসভার যে সব সদস্য মন্ত্রী হয়েছেন, তাঁরা সফর করবেন নিজেদের জেলা। উত্তরপ্রদেশে আপনা দলের নেত্রী অনুপ্রিয়া পটেল আজ প্রয়াগরাজ থেকে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রা শেষ হবে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র মির্জাপুরে।
‘জন আশীর্বাদ’ যাত্রা দেশ জুড়ে হলেও বিজেপির আসল লক্ষ্য উত্তরপ্রদেশ। কারণ, যোগী আদিত্যনাথের শাসনে ওই রাজ্যে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া যে তীব্র হচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কোভিড নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা, করোনায় লাগামছাড়া মৃত্যু, লোকের কাজ হারানো, কেন্দ্রের রেশন-বণ্টন সুষ্ঠু ভাবে না-হওয়ায় আমজনতা ক্ষুব্ধ। তাই সরকারের কাজের সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গেই স্বাস্থ্য বা রেশন বণ্টনে দুর্নীতি এড়াতে যোগী প্রশাসনকে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
রাজ্যবাসীর ক্ষোভের কথা মনে রেখে উত্তরপ্রদেশ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ‘জন আশীর্বাদ’ যাত্রার পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। রাজ্যে সাতটি যাত্রার একটির দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কুণাল কিশোর জানান, আয়ুষ্মান ভারত, কিষাণ নিধি সম্মান, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার মাধ্যমে সরকার যে গরিবদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেই বার্তা সর্বত্র পৌঁছচ্ছে না। সেই সুযোগে আমজনতার মনে ভুল ধারণা তৈরি করছেন বিরোধীরা। তাই উন্নয়নের সুফল যাতে প্রান্তিক এলাকায় পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যেই ওই যাত্রার পরিকল্পনা। বিজেপি সূত্রের খবর, শুধু উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়া নয়, দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করা, করোনা-কালে সরকার যে মানুষের
পাশে রয়েছে, যাত্রার মাধ্যমে সে কথাও আমজনতার কাছে পৌঁছে দিতে চায় দল।