জেপি নাড্ডা ও এনপিপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক।
মণিপুরে সরকার খোয়ানোর উপক্রম হয়েছিল বিজেপির। কিন্তু অমিত শাহের চালেই শেষ পর্যন্ত খাদের কিনারা থেকে ফিরে এল ওই রাজ্যের বিজেপি সরকার। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)-র চার বিধায়ক ‘মন বদল’ করে জোটে থেকে যাওয়ার কথা বলেছেন। এ কথা টুইট করে জানিয়েছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। বুধবার এনপিপি-এর একটি প্রতিনিধি দল দিল্লিতে বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা ও অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করে। তার পরই উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ ফের বদলে যাওয়ার ঘোষণা করেন হিমন্ত।
মণিপুরে বিজেপির গদি টলমল হওয়ার ইঙ্গিত পেয়ে, দলের তরফে ড্যামেজ কন্ট্রোলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নর্থ ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-এর চেয়ারম্যান তথা অসমের অর্থ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও বিজেপি নেতা রামমাধবকে। সেই হিমন্তই মণিপুর সঙ্কটে ইতি ঘোষণা করেছেন বুধবার রাতে। তিনি টুইট করেছেন, ‘‘কনরাড সাংমা ও মণিপুরের উপ মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই জয়কুমার সিংহের নেতৃত্বে এনপিপি-র একটি প্রতিনিধি দল বিজেপি সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডাজির সঙ্গে আজ নয়াদিল্লিতে দেখা করে। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য এনপিপি বিজেপি সরকারকে সমর্থন করবে।’’
বুধবার সকালেই দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন এনপিপি-র ওয়াই জয়কুমার সিংহ এবং রাজ্যের মন্ত্রী এন কাইসি, এল জয়ন্ত কুমার সিংহ ও নেটপাও হাওকিপ। অমিত শাহ ও নড্ডার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে আলোচনাও চলে। এর পরই মণিপুরের রাজনৈতিক অঙ্ক ফের বদলে যায়।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত প্রায় ১৭ হাজার, মোট মৃত্যু ১৫ হাজার ছুঁইছুঁই
মণিপুরে সঙ্কটের সূত্রপাত হয়েছিল জুনের শুরুর দিকেই। সে সময় ইস্তফা দেন মণিপুরের উপ-মুখ্যমন্ত্রী, এনপিপি-র ওয়াই জয়কুমার সিংহ। দলের চার বিধায়ককেও সরকার থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেয় এনপিপি। সঙ্কট আরও গভীর হয় বিজেপির তিন বিধায়ক দল ছেড়ে দেওয়ায়। নেডা থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেন জিরিবামে নির্দল হিসেবে জয়ী একমাত্র তৃণমূল বিধায়কও। সকলে কংগ্রেসকে সমর্থন করার কথা বলেন। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে টানাপড়েন চলছিল। ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের বিরুদ্ধে বার বার অসন্তোষ জানাচ্ছিলেন এনপিপি-সহ নেডার একাধিক বিধায়ক। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে উপ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্ঘাত শুরু হয়। তার জেরেই নেডা থেকে বেরিয়ে যান এনপিপির বিধায়করা। মণিপুরে ৬০ সদস্যের বিধানসভায় কার্যকর বিধায়ক সংখ্যা হতে চলেছে ৫২। কারণ, এক মন্ত্রীর বিধায়কপদ ইতিমধ্যেই খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আর যে ৭ বিধায়ক কংগ্রেসের টিকিটে জিতেও বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের বিধায়কপদ খারিজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ফলে এই মুহূর্তে ওই রাজ্যে ম্যাজিক সংখ্যা ২৭ হওয়ার সম্ভাবনা। বিরোধী কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা এখন ২০। ৪ বিধায়ক জোট ছেড়ে যাওয়ায় বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোটের বিধায়কের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩ (বিজেপির ১৮, এনপিএফের ৪ ও লোক জনশক্তি পার্টির ১)। অবশ্য সেই সঙ্কটে ছেদ টেনে বিজেপি নেতা রামমাধব জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমি আত্মবিশ্বাসী ২০২২ সাল পর্যন্ত আমাদের সরকার কোনওরকম টানাপড়েন ছাড়াই চলবে।’’
আরও পড়ুন: গালওয়ানে পাকা ঘাঁটি গড়েছে চিন, ধরা পড়ল উপগ্রহচিত্রে