মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল ছবি
ত্রিপুরার পাল্টা বঙ্গে!
ত্রিপুরার পুরভোটে বিজেপির সন্ত্রাস ও তাতে বিপ্লব দেব সরকারের নিষ্ক্রিয়তা আর মদত নিয়ে গত কিছু দিন ধরেই প্রবল ভাবে সরব রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগরতলা, কলকাতা হয়ে জল গড়িয়েছে দিল্লিতেও। এমনকি সুপ্রিম কোর্টও ভোটে শান্তি রাখতে নির্দেশ দিয়েছে বিপ্লব প্রশাসনকে। এরই পাল্টা হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কর্মীদের উপরে আক্রমণের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে চাপ তৈরির কৌশল নিল বিজেপি। আঙুল প্রতিপক্ষের দিকে ঘুরিয়ে দিতে বাংলায় ধারাবাহিক ভাবে বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলার বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করেছেন বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব।
ত্রিপুরায় তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার দাবিতে গত সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। দিনভর ধর্নার পরে বিকালে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন শাহ। এ বার তৃণমূলের ধাঁচেই নবান্নের সামনে ধর্নায় বসা ও কী ভাবে বিজেপি কর্মীরা ভোট-পরবর্তী হিংসার শিকার হচ্ছেন তা মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে জানানোর জন্য তাঁর সময় চাওয়ার কৌশল নিতে চলেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আজ বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক প্রথা মেনে তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেছেন অমিত শাহ। বিজেপি যে গণতন্ত্র মেনে চলে ওই বৈঠকই তার প্রমাণ। আমরাও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা ভাবছি। যেখানে বিজেপি কর্মীদের উপর শাসক দলের অত্যাচারের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হবে। আশা করছি, গণতান্ত্রিক প্রথা মেনে মুখ্যমন্ত্রী প্রধান বিরোধী দলের সঙ্গে দেখা করবেন। যেমনটি করেছেন অমিত শাহ।’’
রাজ্য বিজেপি সূত্রের মতে, তাঁরা নিশ্চিত, কোনও ভাবেই বিজেপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করার সময় দেবেন না তৃণমূল নেত্রী। সে ক্ষেত্রে তৃণমূল তথা মমতা নিজেই গণতান্ত্রিক প্রথা মেনে চলেন না— এই বিষয়টি মানুষের সামনে তুলে ধরা যাবে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
সুকান্ত গত দু’দিন ধরে দিল্লিতে রয়েছেন। তিনি রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে এখনও নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা হয়নি। মূলত কমিটির ৩১ জন সদস্যের তালিকা চূড়ান্ত করতেই গত কাল রাতে বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালব্য ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষের সঙ্গে বৈঠক করেন সুকান্ত। সূত্রের মতে, চলতি সফরে দলের সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গেও বৈঠক করার পরিকল্পনা ছিল সুকান্তের। কিন্তু নড্ডা উত্তরপ্রদেশের কানপুর ও গোয়ার পানাজিতে বিধানসভা প্রচারের ব্যস্ত থাকায় আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে বৈঠক হয়নি সুকান্তের।
সুকান্ত আজ বলেন, ‘‘আগামী মাসে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। ৩১ জনের কমিটিতে মহিলাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কমিটির এক-চতুর্থাংশ হবেন মহিলারা, এমনটা ভাবা হয়েছে। রাজ্যের যুব সমাজকে কাছে টানতে আরও বেশি করে যুব নেতাদের সুযোগ দেওয়া হবে।”