রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
গত কালের পরে আজও শাসক-বিরোধী বিক্ষোভের সাক্ষী থাকল সংসদ চত্বর। গত কাল মকর দ্বারের সামনে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন কংগ্রেস ও বিজেপি সাংসদেরা। আজ অবশ্য তা হয়নি। তবে দু’দলই নিজেদের বিক্ষোভ মিছিল শেষ করে মকর দ্বারের সামনে এসেই। কংগ্রেস আজ বিজয় চক থেকে মিছিল করে মকর দ্বারে আসে। অন্য দিকে বিজেপি সাংসদেরা বি আর অম্বেডকরের মূর্তির সামনে থেকে মিছিল করে এসে পৌঁছন মকর দ্বারেই।
ঘটনা হল, গত কালের ধাক্কাধাক্কির ঘটনার পরে মকর দ্বারের সামনে কোনও বিক্ষোভ দেখানো যাবে না বলে ঘরোয়া ভাবে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আজ সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে নামে উভয় পক্ষ। আজ এগারোটায় অধিবেশন শুরু হলে স্পিকার ওম বিড়লা এ নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, ‘‘সংসদের মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব সকলের। সংসদ ভবনের যে কোনও প্রবেশ দ্বারে কোনও ধরনের ধর্না বা বিক্ষোভ দেখানো অনুচিত। সকলকে এই নিয়ম মানার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। না হলে সাংসদদের বিরুদ্ধে উচিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ইন্ডিয়া মঞ্চের প্রতিবাদ। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
অন্য দিকে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এ বার স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ এনে তাঁকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করার জন্য নোটিস দিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তাঁর অভিযোগ, অমিত শাহের ভুয়ো ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছেন রাহুল গান্ধী। যা এক দিকে যেমন অপরাধ তেমনই সংসদের অবমাননা। তাই তাঁকে অবিলম্বে সাসপেন্ড করে তদন্ত শুরু করা হোক। কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন ওই একই কারণে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের বিরুদ্ধেও স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনা হয়েছে।রাজ্যসভায় অম্বেডকর সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার জন্য অমিত শাহের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন খড়্গে। রাজনীতির অনেকের মতে, তারই জবাবে খড়্গের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব এনেছে বিজেপি।
রাহুলের বিরুদ্ধে গত কাল বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৯ ধারায় খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। যদিও পুলিশ এফআইআরে ১০৯ ধারায় রাহুলের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দেয়নি। তবে রাহুলের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবে কাউকে গুরুতর আঘাত করার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার মতে, ‘‘রাহুল কাউকে ধাক্কা দিতে পারেন না। আমি ওঁর বোন। রাহুল এমন কাজ করতে পারেন না।’’ অম্বেডকর-মন্তব্যের জেরে এ দিনও শাহের ইস্তফা দাবি করেছেন রাহুল।
তবে রাহুলকে কোণঠাসা করার সুযোগ ছাড়তে রাজি নয় শাসক শিবির। আজ রিজিজু বলেন, ‘‘আমাদের দু’জন সাংসদ আহত হয়েছেন। রাহুল ওই দুই সাংসদকে ধাক্কা দিয়েছিলেন বলে তাঁরা আহত হন।’’ আর খড়্গেকে বিজেপি নেতাদের ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রিজিজু বলেন, ‘‘প্রবীণ এক জন নেতাকে কেন কেউ ধাক্কা দিতে যাবেন!’’