বিজেপি সাংসদ গোপাল শেট্টি
এক মাসে ১২৪! বম্বে হাইকোর্টের তৎপরতায় মহারাষ্ট্রে কৃষক-আত্মহত্যার এমনই ছবি প্রকাশ্যে এসেছে দু’দিন আগে। এই অবস্থায় উত্তর মুম্বইয়ের বিজেপি সাংসদ গোপাল শেট্টি বললেন, ‘‘আত্মহত্যা করা চাষিদের একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে’’!
স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্যের শাসক দলের নেতার এমন মন্তব্যে বিতর্ক চরমে। বিরোধীরা সরব, চাষিদের প্রতি সরকারের আসলে কোনও সহানুভূতিই নেই। শেট্টি অবশ্য তড়িঘড়ি জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
গত কাল বোরিভালিতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে শেট্টি বলেন, ‘‘সব কৃষক মোটেই বেকারত্ব কিংবা না খেতে পেয়ে আত্মহত্যা করেন না। একটা ফ্যাশন শুরু হয়েছে। এটাই এখন ট্রেন্ড।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র সরকার যদি ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়, তা হলে অন্য কোনও পড়শি রাজ্যের সরকার সাত লাখ দেয়...। চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে এদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।’’
শেট্টির এ হেন মন্তব্যের পর বিতর্ক বাঁধতে বিশেষ সময় লাগেনি। সমালোচনা করে কংগ্রেসের বক্তব্য, কৃষকদের অবস্থা নিয়ে বিজেপির আসলে কোনও মাথাব্যথা নেই। ‘‘মহারাষ্ট্রের কৃষি-ব্যবস্থা যখন এমন সঙ্কটে, তখন শেট্টির মন্তব্যই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, তিনি ও তাঁর দল আসলে কতটা অসংবেদনশীল। ওই চাষিরা হয়তো ঋণের দায়ে কিংবা ফলন ভাল না হওয়ায় আত্মঘাতী হতে বাধ্য হয়েছেন,’’ বলেন মুম্বইয়ে কংগ্রেসের প্রধান সঞ্জয় নিরুপম।
উত্তর মুম্বইয়ের সাংসদের অবশ্য দাবি, তিনি কখনওই বলেননি যে কৃষকরা সরকারের থেকে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য আত্মঘাতী হচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, ১২৪ জন কৃষকের আত্মহত্যা কি সরকারের ব্যর্থতা নয়? তাতেই আমি বলি, দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকার ‘জল শিবর যোজনা’-র মতো কত ভাল কাজ করছে। চাষিদের কাছে এর সুফল পৌঁছতে কিছুটা সময় লাগবে। এক রাতে তো সব কিছু বদলে যাবে না। গত ১৫ বছর ধরে পুরনো সরকার কিছুই করে যায়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি এ-ও বলেছিলাম, সব রাজ্যের ক্ষতিপূরণ দেওয়া এখন একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ ৫ লাখ দিলে কেউ ৮ লাখ দেয়, কেউ আবার ৯ লাখ দেয় মৃতের পরিবারকে। বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিযোগিতা নিয়ে বলেছি, কিন্তু চাষিদের আত্মহত্যা করা ফ্যাশন হয়ে উঠেছে, এমন মন্তব্য কখনওই করিনি।’’