পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচার তুঙ্গে। কিন্তু রাজ্যের দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতারা আপাতত উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেস সরকারকে সঙ্কটে ফেলতে তৎপর।
৭০ জনের উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় কংগ্রেস কোনও রকমে সরকার টিকিয়ে রেখেছে ৩৬ জন বিধায়কের জোরে। প্রোগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাটিক জোটের আরও ছ’জন বিধায়কও কংগ্রেসকে সমর্থন করছেন। কিন্তু গত কাল রাতে ৯ জন বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে হাত মেলান। বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ২৮। ফলে, ৯ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ককে নিলে সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে ৩৭। গত কাল গভীর রাতে বিজেপির এক প্রতিনিধি দল রাজ্যপাল কে কে পলের সঙ্গে দেখা করে জানায়, রাওয়াত সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় বহুগুণার নেতৃত্বে ৯ জন বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়ককে চার্টার্ড বিমানে করে নিয়ে আসা হয়েছে দিল্লিতে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও দেখা করে রাওয়াত সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর কথা বলতে চায় বিজেপি। উত্তরাখণ্ডের বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস বিধায়কদের সামলানোর দায়িত্বে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশের মতো বিজেপি নেতারা।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর অবশ্য দাবি, তাঁর সরকার এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ। দিল্লি চলে যাওয়া আট জন বিক্ষুব্ধ বিধায়কের পাঁচ জন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রাওয়াতের কথায়, ‘‘ওঁরা ভুল স্বীকার করে ফিরে আসতে চাইলে আমরা আর একটা সুযোগ দেব। নইলে দলত্যাগ বিরোধী আইনে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’ উত্তরাখণ্ড পুলিশের ঘোড়া শক্তিমানের পা ভাঙার জন্য বিজেপি বিধায়ক গণেশ জোশী আপাতত জেলে। রাওয়াতের কটাক্ষ, ‘‘ঘোড়ার পা ভাঙার পরে এখন বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচায় নেমেছে।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার অভিযোগ, ‘‘অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদী অরুণাচলের কায়দায় উত্তরাখণ্ডেও সরকার ফেলতে চাইছেন।’’ এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। রাজ্যপাল কে কে পল ২৮ মার্চের মধ্যে রাওয়াতকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে বলেছেন।
আগামী বছরই উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে উত্তরাখণ্ডের নির্বাচন। তার আগেই দেহরাদূনের মসনদ দখলে আনতে পারলে এক ধাপ এগোতে পারবে বিজেপি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ভোটের প্রচার যখন সরগরম, তখন সেই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কেন উত্তরাখণ্ড নিয়ে ব্যস্ত?
কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের দাবি, ‘‘দলের সভাপতি অমিত শাহ নির্দেশ দিয়েছেন। তাই উত্তরাখণ্ডে সরকার গড়ার সম্ভাবনা আমরা খতিয়ে দেখছি। পশ্চিমবঙ্গকে আদৌ উপেক্ষা করা হচ্ছে না।’’