ওয়েনাড়ে রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
ধস নেমে ওয়েনাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখনও অনেকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। কাদামাটির স্তূপের তলায় চাপা পড়ে গিয়েছে বসতি। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। চলছে প্রাণের খোঁজ। ওয়েনাড়ের এই পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণার দাবি উঠছিল বিভিন্ন মহল থেকে। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপি-শাসিত জোট সরকার যে তেমন কিছু করার কথা ভাবছে না, তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ভি মুরলীধরন।
বৃহস্পতিবার ওয়েনাড়ের পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। সেখানে গিয়ে গত মঙ্গলবার ওয়েনাড়ের পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন তিনি। রাহুল বলেছিলেন, “আমার মতে, এটি নিশ্চিত ভাবে জাতীয় বিপর্যয়। এখন দেখা যাক সরকার কী বলে।” রাহুলের এই মন্তব্যের পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠছিল যাতে ওয়েনাড়ের পরিস্থিতিকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
তবে ইউপিএ-২ আমলে সরকার পক্ষের বক্তব্যকেই ‘অস্ত্র’ করে এর জবাব দিয়েছেন বিজেপি নেতা মুরলীধরন। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে তিনি ২০১৩ সালের সংসদীয় নথি তুলে ধরেছেন। বিজেপি নেতার দাবি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী মুল্লাপল্লি রামচন্দ্রন উল্লেখ করেছিলেন “প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে জাতীয় বিপর্যয় হিসাবে ঘোষণা করার কোনও নিয়ম কোথাও উল্লেখ নেই।”
ইউপিএ-২ আমলের ওই সংসদীয় নথির কথা উল্লেখ করে বিজেপি নেতা বলেছেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও নির্দেশিকায় কোথাও ‘জাতীয় বিপর্যয়’-এর ধারণার উল্লেখ নেই। ইউপিএ আমল থেকেই এটা চলছে।” যদিও বিজেপি নেতা আশ্বস্ত করেছেন, কোথাও জাতীয় বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রতিটি বিপর্যয়ের পরই পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়।
উল্লেখ্য, বর্তমানে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণার কথা কোথাও উল্লেখ নেই। তবে এই ‘জাতীয় বিপর্যয়’ শব্দবন্ধটি নতুন নয়। অতীতেও বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার দাবি উঠেছিল। যেমন ১৯৯৫-২০০০ সালে দশম অর্থ কমিশনের কাছে একটি প্রস্তাব গিয়েছিল, কোনও বিপর্যয়ের কারণে যদি কোনও রাজ্যের এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা প্রভাবিত হয়, তবে সেটিকে ‘বিরলতম ক্ষয়ক্ষতির জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণা করা হোক।