গ্রাফিকঃ সনৎ সিংহ।
পুলিশের নীতিপুলিশি! ব্যস্ত রাস্তায় সন্ধ্যা ৭টার সময় যৌন হেনস্থার শিকার হওয়ার পর থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন তরুণী। কিন্তু অভিযোগ নেওয়ার আগেই পুলিশের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘সন্ধে ৭টার সময় বাইরে ছিলেন কেন?’’ এমনই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের নয়ডায়।
তরুণীর বাড়ি নয়ডার সেক্টর ৪৮ এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বৃষ্টির মধ্যে একটি রিল বানানোর জন্য আবাসনের বাইরে বেরিয়েছিলেন তিনি। ব্যস্ত রাস্তায় রিল ভিডিয়োটি শুট করার সময় হঠাৎই এক অপরিচিত মাঝবয়সী ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে টান মেরে তাঁর শর্টসটি ছিঁড়ে দেন। ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যান ওই তরুণী। এই সময় দু’টি মেয়ে বিষয়টি দেখতে পেয়ে তরুণীকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে চম্পট দেয় ওই ব্যক্তি।
ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠে থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন বলে মনস্থির করেন ওই তরুণী। সেই মতো সেক্টর ৪৯-এর থানায় পৌঁছন। কিন্তু সেখানেও তাঁর জন্য অপেক্ষা করে ছিল আর এক ধাক্কা! অভিযোগ নেওয়ার বদলে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার তাঁকেই পাল্টা দোষ দিতে শুরু করেন। জানতে চাওয়া হয়, সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেনই বা কেন? অপমানে থানা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন ওই তরুণী।
এর পরেও হাল ছাড়েননি তরুণী। থানা থেকে বেরিয়ে প্রমাণ সংগ্রহের জন্য সোজা আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীর কাছে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজের খোঁজে যান তিনি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, আবাসনের অর্ধেকের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরাই নাকি অচল! ফলে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন হেনস্থার ঘটনার কোনও প্রমাণ নেই। এত চেষ্টার পরেও কোনও সুরাহা না পেয়ে ভেঙে পড়েন ওই তরুণী। শেষমেশ সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়োতে গোটা ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। ঘটনার ভিডিয়ো দ্রুত সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এতেই চার দিকে সমালোচনা।
ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই জনরোষ সামাল দিতে দোষ স্বীকার করে একটি বিবৃতি দিয়েছে নয়ডা পুলিশ। জানানো হয়েছে, ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। শীঘ্রই আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে। যত দ্রুত সম্ভব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানিয়েছে নয়ডা পুলিশ।