বিজেপির জাতীয় সম্পাদক পঙ্কজা মুন্ডে। — ফাইল ছবি।
কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন না মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেত্রী পঙ্কজা মুন্ডে। আপাতত ‘এক-দু’মাসে’র ছুটি নিচ্ছেন রাজনীতি থেকে। তবে বিজেপির প্রতি নিজের অসন্তোষের কথাও জানিয়ে দিয়েছেন গোপীনাথ-কন্যা।
আপাত অশান্ত মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়িয়েছিল তাঁকে নিয়ে প্রকাশিত একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন। যাতে দাবি করা হয়েছিল, বিজেপির জাতীয় সম্পাদক ৪৩ বছরের পঙ্কজা কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দু’বার দেখা করেছেন। তার পরেই জল্পনা চরমে ওঠে, তাহলে কি বিজেপি ছাড়ছেন পঙ্কজা? শুক্রবার সেই জল্পনা নস্যাৎ করলেন পঙ্কজা নিজেই। স্পষ্ট জানালেন, ‘‘আমি কোনও দিন অন্য কোনও দলের কোনও নেতার সঙ্গে দল ছাড়া নিয়ে আলোচনা করিনি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোনও দিন রাহুল গান্ধী বা সনিয়া গান্ধীকেই দেখিনি। এই ধরনের প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা। মামলা করব।’’
তবে নিজের দলত্যাগের সম্ভাবনার জল্পনা নাকচ করলেও মহারাষ্ট্রে বিজেপির একাধিক বিধায়ক যে নেতৃত্বের উপর অসন্তুষ্ট, তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। পঙ্কজা বলেন, ‘‘বিজেপির এখানে ১০৫ জন বিধায়ক রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অসন্তুষ্ট। কিন্তু তাঁরা প্রকাশ্যে তা বলতে ভয় পাচ্ছেন। নরেন্দ্র মোদী স্লোগান দিয়েছিলেন, ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’, মানুষ কিন্তু তাকে বিশ্বাস করেছিল।’’
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গোপীনাথ মুন্ডের কন্যা পঙ্কজা কী করবেন তা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই জল্পনা দানা বাঁধছিল। সেই জল্পনা খারিজ করলেও দলের মধ্যে যে অসন্তোষ রয়েছে, তা এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। বস্তুত, এনসিপির অজিত পওয়ারেরা যখন বিজেপি-শিবসেনা সরকারে যোগ দেন, তখন থেকেই বিজেপি বিধায়কদের একটি অংশের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সেই প্রেক্ষিতেই পঙ্কজা মুখ খুলে দলের অসন্তোষের কথা প্রকাশ্যে আনলেন। এ নিয়ে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকেও প্রশ্ন করা হয়। তিনিও পঙ্কজার অভিযোগকে কার্যত মান্যতা দিয়ে বলেন, ‘‘আমার দলের বহু লোক এনসিপির বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই করেছেন। তাই তাঁরা এনসিপির সঙ্গে বিজেপির জোটকে মেনে নিতে পারছেন না। নেতৃত্ব পঙ্কজার সঙ্গে অবশ্যই এ নিয়ে কথা বলবে। তিনি জাতীয় স্তরের নেত্রী।’’
দল না ছাড়লেও তিনি যে আপাতত রাজনীতি থেকে কিছু দিনের ‘ব্রেক’ নিচ্ছেন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পঙ্কজা বলেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি, যে দিন আমাকে আমার আদর্শের সঙ্গে আপোস করতে হবে, সে দিনই আমি রাজনীতি ছাড়তে দ্বিধা করব না। তবে আমি দু’মাসের জন্য ছুটি নিচ্ছি।’’
সম্প্রতি এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার-সহ আট বিধায়ক বিজেপি-শিবসেনা জোট সরকারে যোগ দেন। উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয় অজিতকে। এনসিপি থেকে আসা অন্যান্যদেরও রাজ্যে মন্ত্রী করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছিল। পঙ্কজার সাংবাদিক বৈঠক সেই অসন্তোষকেই প্রকাশ্যে এনে ফেলল।