ফাইল চিত্র
লাগাতার অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে পড়ে এ বার বিরোধী শিবিরে কংগ্রেসকে একঘরে করার কৌশল নিচ্ছে বিজেপি।
লাদাখে চিন জমি দখল করেছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাহুল গাঁধী। বিদেশ মন্ত্রক সে কথা মানলেও, ‘কেউ ভারতের এলাকায় ঢোকেনি’ বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন চিনের সুরে কথা বলছেন, তা নিয়েও রাহুল প্রশ্ন তুলছেন। তিরের মুখে এ বার বিজেপির পাল্টা প্রচারের মন্ত্র হল, কংগ্রেস রাহুলকে দলের সভাপতি পদে ফিরিয়ে ‘রিলঞ্চ’ করতে চাইছে। তাই কংগ্রেস নিজেকেই একমাত্র বিরোধী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে।
আজ গাঁধী পরিবারকে নিশানা করে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার মন্তব্য, প্রত্যাখ্যাত, উৎখাত হওয়া এক রাজবংশ নিজেকে গোটা বিরোধী শিবির ভাবছে। কিন্তু ওই রাজবংশ ও বিরোধী শিবির এক নয়। কংগ্রেস নেতাদের পাল্টা যুক্তি, কংগ্রেসের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে না বলেই বিরোধী শিবির থেকে কংগ্রেসকে আলাদা করার চেষ্টা করছে বিজেপি।
লাদাখ নিয়ে এমনিতেই সিংহভাগ অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি দল মোদী সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছে, এখন গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সর্বদলীয় বৈঠকে এনসিপি, ডিএমকে-র মতো কংগ্রেসের শরিক দলও কেন্দ্রের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে।
তার পর থেকেই বিজেপির দাবি, কংগ্রেস বিভাজনের চেষ্টা করলেও লাভ হচ্ছে না।
লাদাখে নিহত জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাতে কংগ্রেস শুক্রবার ‘শহিদের প্রতি সম্মান দিবস’ পালন করবে। এ দিকে, বাকিরা পাশে না-থাকলেও কংগ্রেস সুর নরমে নারাজ। লাদাখে ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ নিয়ে মোদীকে প্রশ্ন ছুড়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। আজ কংগ্রেসের দুই সাংসদ মনীশ তিওয়ারি ও গৌরব গগৈ অরুণাচলের বিজেপি সাংসদ তাপির গাওয়ের লোকসভায় বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, শুধু লাদাখ নয়, অরুণাচলেও ভারতীয় জমি দখল করে ঘাঁটি গেড়েছে চিন।
নড্ডার কটাক্ষ, ‘‘রাজবংশের উত্তরাধিকারী উল্টোপাল্টা বলেন। তাঁর অনুগত পারিষদেরাও মিথ্যে প্রচার করেন। কিন্তু রাজবংশের স্বার্থ দেশের স্বার্থ নয়। এখন ঐক্যবদ্ধ থাকার সময়। রাজবংশের উত্তরাধিকারীর ‘রিলঞ্চ’ পরেও হতে পারে।’’ তাঁর দাবি, ইউপিএ আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে সেনা সরানো সমঝোতায় প্রায় রাজি হয়ে সিয়াচেনে হিমবাহ খোয়াতে বসেছিল ভারত। নড্ডার কথায়, ‘‘প্রাক্তন বিদেশসচিব শ্যাম সরন তাঁর বইয়ে লিখেছেন, কী ভাবে শেষ বেলায় পাকিস্তানের সঙ্গে এই সমঝোতা আটকান মনমোহন সিংহ জমানার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এম কে নারায়ণন।’’ জবাবে পি চিদম্বরমদের যুক্তি, ‘‘সিয়াচেন নিয়ে আলোচনা সব আমলেই হয়ে এসেছে। আর দু’দেশের সেনা সরানো যদি জমি খোয়ানো হয়, লাদাখে তা-হলে মোদী সরকার কী করছে?’’