বিএস ইয়েদুরাপ্পা —ফাইল চিত্র
সব ঠিকঠাক থাকলে আগামিকালই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শেষ দিন কর্নাটকের বিএস ইয়েদুরাপ্পার। এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে, ২৬ জুলাই দলের ক্ষমতায় ফেরার দু’বছরের মাথায় ইস্তফা দেবেন ইয়েদুরাপ্পা। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পার পরে কাকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বিজেপি।
লিঙ্গায়েত মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্ত হিসেবে লিঙ্গায়েত, না কি রাজ্য রাজনীতিতে লিঙ্গায়েত বিরোধী কোনও ভোক্কালিগা নেতাকে ক্ষমতায় বসানো হবে, তা নিয়ে সংশয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। অন্য দিকে আরএসএসের একটি অংশ ৩২ বছর পরে ওই রাজ্যে কোনও ব্রাহ্মণ মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর পক্ষে সরব। সব মিলিয়ে ইয়েদুরাপ্পা সরে যেতে রাজি হলেও তাঁর উত্তরসূরি কে হবেন, সে প্রশ্নে দ্বিধাবিভিক্ত বিজেপি শিবির।
বিজেপির একটি অংশ লিঙ্গায়েত ইয়েদুরাপ্পার পরিবর্তে ওই পদে কোনও লিঙ্গায়েত নেতাকেই বসানোর পক্ষে। তা না হলে লিঙ্গায়েত ভোট ব্যাঙ্ক বিজেপির পাশ থেকে সরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাজ্যে প্রায় ১৬ শতাংশ ভোট রয়েছে লিঙ্গায়তদের। সেই ভোটের গোটাটাই পাশ থেকে সরে গেলে আগামী দিনে সরকারে ফেরা কঠিন হয়ে যাবে বিজেপির। তাই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে উঠে এসেছে একাধিক লিঙ্গায়েত নেতার নাম। দৌড়ে রয়েছেন লিঙ্গায়েত নেতা তথা খনি মন্ত্রী মুরুগেশ আর নিরানি। যিনি অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ। আরেক লিঙ্গায়েত নেতা বি পাটিল ইয়াতনাল আবার সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ। উত্তর কর্নাটকের ওই নেতা পুরনো সঙ্ঘ কর্মী ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও ঘনিষ্ঠ। সূত্রের মতে, লিঙ্গায়েত নেতাদের দৌড়ে আপাতত দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন তিনিই। বিজেপি সূত্রের মতে ইয়েদুরাপ্পা চান, তাঁর পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসুন বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসবরজ বোম্মানি। কর্নাটক রাজনীতিতে ওই লিঙ্গায়েত নেতা ইয়েদুরাপ্পা ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। দৌডে় রয়েছেন আরেক লিঙ্গায়েত নেতা অরবিন্দ বল্লাড।
ইয়েদুরাপ্পা সরে যাওয়ার পরে দীর্ঘ দিন বাদে ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখছে ভোক্কালিগা সম্প্রদায়। লিঙ্গায়েতদের মতো এরাও দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক। বিজেপির এক নেতার কথায়, এত দিন ইয়েদুরাপ্পা থাকায় ভোক্কালিগাদের কোনও সুযোগ ছিল না। কিন্তু এখন ইয়েদুরাপ্পা সরে যাওয়ায় স্বভাবতই ক্ষমতার দাবিতে সরব হয়েছে ভোক্কালিগারা। নাম উঠে এসেছে মন্ত্রী সি টি রবির। রবিকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে দীর্ঘ দিনের দাবি মিটবে ভোক্কালিগাদের।
তালিকায় রয়েছেন ব্রাহ্মণ নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী, দলের সংগঠনের নেতা বি এল সন্তোষ, বিশ্বেশ্বর হেগড়ে কাগেরি। ১৯৮৮ সালে রামকৃষ্ণ হেগড়ের পরে কর্নাটকে আর কোনও ব্রাহ্মণ মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় বসেনি। সে কারণে এ বার সঙ্ঘ পরিবারের একাংশ কোনও ব্রাহ্মণ নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে আগ্রহী। ব্রাহ্মণ ওই নেতাদের মধ্যে জোশী আবার মোদীর আস্থাভাজন ও দল মনে করে তিনি সকলকে নিয়ে চলতে সক্ষম। ব্রাহ্মণ নেতাদের মধ্যে আপাতত দৌড়ে তিনিই
এগিয়ে রয়েছেন।