মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
পশ্চিমবঙ্গে ইন্ডিয়া জোট কার্যত ভেঙে যাওয়ার মুখে। তাতে রীতিমতো উৎসাহিত রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁরা মনে করছেন, এর ফলে লোকসভা ভোটে বিজেপির ফল আরও ভাল হবে। তৃণমূল ও ইন্ডিয়া জোটের দলগুলি যদি আলাদা লড়ে, সে ক্ষেত্রে বিজেপির বিরোধী ভোট বিভিন্ন দলের মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে। আবার একই সঙ্গে মমতা যেহেতু জাতীয় স্তরে ইন্ডিয়া জোটে থাকছেন, ফলে রাজ্যের তৃণমূল-বিরোধী ভোট বিজেপি একাই পাবে বলে দলের আশা।
রাজ্যে সব ক’টি আসনে একলা লড়াই করার ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিক থেকে জাতীয় রাজনীতিতে নিজের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখার মরিয়া চেষ্টা বলে মনে করছেন বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালবীয়। তাঁর কথায়, ‘‘রাহুলের বঙ্গ সফরের ঠিক আগে মমতার বয়ান জোটের কফিনে শেষ পেরেক।’’ তবে মমতা আজ রাজ্যে আসন সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেও তিনি কেন্দ্রীয় স্তরে যে ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে রয়েছেন, সেই বার্তা দিতে ভোলেননি। এই ‘দ্বিচারিতার’ জবাবও বাংলার মানুষ নির্বাচনে দেবেন বলে দাবি করছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব এখন মনে করছেন, মমতা কেন্দ্রীয় স্তরে জোটে থাকলে তৃণমূল-বিরোধী ভোট অন্য দলে যাওয়ার পরিবর্তে একজোট হয়ে বিজেপির বাক্সে পড়বে। সুতরাং মমতা জোটে থাকলেও বিজেপির সুবিধা, না থাকলেও বিজেপির সুবিধা। বরং মমতার আজকের অবস্থানের পরে ইন্ডিয়া জোটকেই সার্বিক ভাবে ফের কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতারা। সুকান্ত যেমন এ দিন বলেন, ‘‘ইন্ডিয়া জোট রাজনৈতিক ভাবে সম্ভব নয়, কার্যকর নয়। পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটে কত জন কংগ্রেস কর্মী খুন হন? এর পরেও জোট হবে? রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সীতারাম ইয়েচুরি বসে ফিশ ফ্রাই আর কফি খেলে নিচুতলার সিপিএম ও কংগ্রেস কর্মীরা তৃণমূলকে ভোট দেবেন বলে যাঁরা ভাবছিলেন, তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করেন। মুখ্যমন্ত্রী সেই বাস্তবতা বুঝেছেন, তাই জোটে থাকতে চাইছেন না।’’ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, অর্থহীন, কর্মসূচিহীন, ২৭ জন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর জোট টিকতে পারে না। সুকান্তর কটাক্ষ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের কথা ছেড়ে দিন, ভারতের ক্ষেত্রেও ইন্ডিয়া জোট এমন একটি নৌকা যার নাবিক নেই।’’