কে আন্নামালাইয়। ছবি: পিটিআই।
এডিএমকে-র এনডিএ-ত্যাগ দ্রাবিড়ভূমিতে জল মাপার সুযোগ করে দিল বিজেপিকে।
দীর্ঘ সময় ধরে মনোমালিন্য চলার পরে গত কাল এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় জয়ললিতার দল এডিএমকে। ওই জোট ভেঙে যাওয়ার পিছনে অভিযোগের আঙুল মূলত উঠেছে ওই রাজ্যের বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাইয়ের দিকেই। এডিএমকে নেতৃত্বের অভিযোগ, আন্নামালাই একলা চলো নীতি নিয়ে চলতে গিয়ে সি এন আন্নাদুরাই, জে জয়ললিতার মতো নেতাদের সমালোচনা করছিলেন। যা মোটেই ভাল ভাবে নিচ্ছিলেন না দলের কর্মী-সমর্থকেরা। ফলে বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করার জন্য চাপ বাড়ছিল এডিএমকে নেতৃত্বের উপরে।
রাজনীতির অনেকের মতে, এর ফলে তামিলনাড়ুতে আন্নামালাইয়ের নেতৃত্বে বিজেপি কী অবস্থায় রয়েছে, তা বোঝার সুযোগ পেতে চলেছে দল। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ আন্নামালাইয়ের উপরে এতটা আস্থা রেখে কি ঠিক করল দল? কারণ, দলের একাংশের মতে, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার আন্নামালাই রাজনীতিতে আনকোরা, বিধানসভা নির্বাচনে লড়ে হেরে গিয়েছেন। ফলে তাঁর উপরে এতটা ভরসা রাখা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনি অন্য অংশের মতে, ওই রাজ্যে হিন্দুদের স্বার্থরক্ষার প্রশ্নে এই মুহূর্তে দলের সেরা বাজি আন্নামালাই। বিশেষ করে তাঁর আপসহীন মনোভাবের কারণে শক্তিবৃদ্ধি হচ্ছে দলের। আক্রমণাত্মক, অব্রাহ্মণ নেতার যুদ্ধং দেহি মনোভাবে অল্প দিনেই সঙ্ঘ পরিবারের আস্থার পাত্র হয়ে উঠেছেন তিনি। বিশেষ করে ডিএমকে নেতার সনাতন ধর্ম সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের পরে যে ভাবে আন্নামালাই বিরোধিতায় নেমেছেন, তাতে রাজ্যে বিজেপি আগের চেয়ে ভাল ফল করবে বলেই মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব।
দলের একাংশের মতে, এডিএমকের সঙ্গে লোকসভায় জোট করেও বিশেষ লাভ হত না বিজেপির। ওই রাজ্যের ৪০টি লোকসভা আসনের মধ্যে খুব বেশি হলে ৪-৫টি আসনে লড়ার সুযোগ পেত বিজেপি। তুলনায় একলা চলো নীতিতে ওই রাজ্যে সব ক’টি আসনে নিজেদের শক্তি মাপতে পারবে দল। বিশেষ করে দ্রাবিড় রাজনীতির অ-হিন্দু নীতির বিরুদ্ধে যে অংশ ক্ষুব্ধ, সেই অংশের ভোট অন্তত বিজেপি টানতে পারবে বলেই মনে করছে দল।
পাশাপাশি আজ বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের ‘প্রকৃত চরিত্র’ উন্মোচন করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। আজ একটি ভিডিয়ো বার্তায় বিজেপি দাবি করে, স্বাধীনতার সময়ে ডিএমকে পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আলাদা দ্রাবিড়স্তান চেয়ে সরব হয়েছিল। বিরোধিতা করেছিল ভারতের স্বাধীনতার।