বিজেপির সেই টুইট
৫৬ ইঞ্চির ছাতি এখন কমিকসের সুপার হিরো।
অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড কপ্টার কেলেঙ্কারিতে দুই অভিযুক্ত রাজীব সাক্সেনা ও দীপক তলোয়ারকে বুধবার রাতে দুবাই থেকে ভারতে ফেরানোর পরেই ঢাকঢোল পিটিয়ে জেগে উঠেছে বিজেপির প্রচার বিভাগ। ব্যাপারটা এতটাই তুঙ্গে যে সাফল্যের যাবতীয় কৃতিত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তুলনা করা হয়েছে আমেরিকার কমিকস জগতের সুপার হিরো ব্যাটম্যানের সঙ্গে। বিজেপির দাবি, ব্যাটম্যানের মতো অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন একমাত্র মোদীই। টুইটারে বিজেপি বলেছে, ‘‘এই প্রত্যর্পণের সঙ্গে শুধু একটা তুলনাই চলতে পারে। এর আগে এতটা দ্রুততার সঙ্গে কাউকে প্রত্যর্পণ করেছিলেন ব্যাটম্যান। হংকং থেকে লাওকে তুলে এনে তিনি জিম গর্ডনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।’’ ‘দ্য ডার্ক নাইট’ সিনেমায় হংকং থেকে চিনা মাফিয়া লাওকে উড়িয়ে গোথাম সিটিতে নিয়ে এসেছিলেন ব্যাটম্যান। তুলে দিয়েছিলেন পুলিশ কর্তা জিম গর্ডনের হাতে। ওই ছবিতে ব্যাটম্যন তথা ব্রুস ওয়েন মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘সব কিছুতেই অসম্ভব ব্যাপারটা তত ক্ষণই, যত ক্ষণ না পর্যন্ত কেউ সেটা করে দেখায়।’’ বিজেপি বলছে, ‘‘এ বার ব্যাপারটা ঘটিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।’’ পরে টুইটারে অরুণ জেটলি লিখেছেন, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি সৎ হন, তিনি যদি সরকারে সততার সংস্কৃতি জাগিয়ে তোলেন, তা হলে ভারতকে লুট করে কেউ পালিয়ে যেতে পারবে না।’’
অগুস্তা কাণ্ডের ব্রিটিশ দালাল ক্রিশ্চিয়ান মিশেলকে ভারতে এনে কংগ্রেস নেতৃত্বকে তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে টানা প্রচার চালিয়েছিলেন মোদী। এ বার সেই কেলেঙ্কারিতেই আরও দুই অভিযুক্তকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে ভারতে ফেরানো হল। মোদী সরকারের অনুরোধে বুধবার দুবাইয়ের পুলিশ এঁদের ভারতের হাতে তুলে দেয়। দিল্লিতে ফেরানোর পরে তাঁদের গ্রেফতার করে ইডি। জিজ্ঞাসাবাদের পরে অভিযুক্তদের আজ দিল্লির পাটিয়ালা হাউস আদালতে তোলা হয়। চার দিনের ইডি হেফাজত হয়েছে দুবাইয়ের ব্যবসায়ী সাক্সেনার। পেশায় কর্পোরেট এভিয়েশন লবিইস্ট দীপক তলোয়ারকে সাত দিনের জন্য ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কোর্টে সাক্সেনার আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, বেআইনি ভাবে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে তাঁর মক্কেলকে। পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি।
ইডির অবশ্য অভিযোগ, অগুস্তা কাণ্ডে তলোয়ার প্রায় ৯০ কোটি টাকা সরিয়েছেন। সিবিআই, ইডি তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে। রাজীব সাক্সেনাকে বারবার জেরার জন্য ডাকলেও তিনি তদন্তকারী অফিসারদের সামনে হাজির হননি। ২০১৭ সালে দুবাইয়ের এই ব্যবসায়ীর স্ত্রী শিবানী সাক্সেনাকে চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি এখন জামিনে মুক্ত। রাজীব, তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের দু’টি সংস্থা ইউএইচওয়াই সাক্সেনা এবং ম্যাট্রিক্স হোল্ডিয়ের মাধ্যমে ঘুষের টাকা পাচার হয়েছে।
আরও পড়ুন: আজ ভোট-বাজেট, কমতে পারে আয়করের বোঝা, বাড়বে মধ্যবিত্তের সঞ্চয়