মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
প্রশ্ন ঘুষে অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে সাংসদ পদ থেকে সরানোর দাবিতে ফের সরব হল বিজেপি। দলের সাংসদ রমেশ বিধুরি এ দিন বলেন, এর আগেও ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন করায় একাধিক সাংসদের পদ খারিজ করা হয়। মহুয়ার জন্য নিয়ম আলাদা করা হবে না।
যে রমেশ বিধুরি জোর গলায় মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজের জন্য সওয়াল করছেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিএসপি সাংসদ দানিশ আলিকে লোকসভার মধ্যেই কুকথা বলার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। যদিও এই বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। উল্টে বিজেপির দাবি, দক্ষিণ দিল্লির সাংসদ রমেশ বিধুরিকে উত্তেজিত করা হয়েছিল। আগামী মাসের ৭ তারিখ বিধুরির পাশাপাশি দানিশ আলিকেও তলব করেছে সংসদের প্রিভিলেজ কমিটি, যেখানে বিজেপি সাংসদরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
বিধুরি এ দিন বলেন, ‘‘এর আগেও টাকা নিয়ে প্রশ্ন করায় কয়েক জনের সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে। মহুয়ার জন্য আলাদা নিয়ম হবে না। এই সংক্রান্ত যে সব লেনদেন হয়েছে এবং যে সব উপহার উনি পেয়েছেন, সিবিআই তার তদন্ত করে দেখুক।’’ সিবিআই ইতিমধ্যেই লোকপালের সুপারিশের ভিত্তিতে মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে।
মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও তদন্ত প্রসঙ্গে এ দিন মেচেদায় পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘লোকপাল একটি সাংবিধানিক সংস্থা। তাদের সুপারিশ নিয়ে আমি কিছু বলব না। আমাদের দাবি খুব সাধারণ। ইতিমধ্যে সিবিআই এফআইআর করেছে। আমরা চাই, মহুয়া মৈত্রের সাংসদ-পদ খারিজ হোক। তাঁকে জেলে পাঠানো হোক।’’
এ দিনই দুর্গাপুরে এক চা-চক্রে গিয়ে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষও মহুয়া প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘সংসদে ভাষণ দিতে গিয়ে চেঁচামেচি হয়। সেখানে ভাষণ দিতে গিয়ে উনি (মহুয়া) গালি দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীকেও ইংরেজিতে গালিগালাজ করেন। এখন ফেঁসেছেন। উনি বলছেন, টাকা নেননি। উপহার নিয়েছেন! পাওডার, স্নো। গগল্সের দাম দু’লক্ষ টাকা। এক লক্ষ টাকা মূল্যের ভ্যানিটি ব্যাগ ব্যবহার করেন। যে ঘড়ি ব্যবহার করেন, তার দাম তিন লক্ষ টাকা। দিল্লিতে তাঁর কোয়ার্টার কোটি কোটি টাকা খরচা করে সংস্কার হয়ে গিয়েছে। এর বিনিময়ে দেশের সুরক্ষা বেচে দিয়েছেন। পাপের ঘড়া ভরে গিয়েছে। সিবিআই তদন্ত চলছে। সাংসদ-পদ খারিজও হতে পারে। এই ধরনের জিনিস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করে পাঠিয়েছেন। বাঙালির নাক কান কাটা যাচ্ছে!’’
অন্য দিকে, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের কথা যাঁরা বলেন না, শুধু মহুয়ার বিরুদ্ধে বলেন, তাঁদের ভূমিকা স্পষ্ট। বোঝাই যায়, আদানির কথায় মহুয়ার বিরুদ্ধে কে কত বেশি কড়া বলতে পারেন, তার প্রতিযোগিতা চলছে! আদানির স্বার্থরক্ষার জন্যই তদন্ত হবে, স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’