সিপিএমের বাক্যবাণে অস্ত্র পেল বিজেপিই

কেরলের কান্নুর জেলায় সিপিএমের নানা সংগঠনের সঙ্গে আরএসএসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। দু’তরফেই প্রাণহানির ঘটনা বিস্তর। বিজেপি এবং আরএসএস সম্প্রতি দাবি করেছে, হিংসা নিয়ন্ত্রণে আনার স্বার্থে কান্নুরে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (আফস্পা) জারি করা হোক।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০৪:১৭
Share:

গবাদি পশু কেনাবেচার উপরে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে কেরলের বাম সরকার। কিন্তু সেই সময়েই দলকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কোডিয়েরি বালকৃষ্ণন! সেনাবাহিনী সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যে বিতর্ক এমনই আকার নিয়েছে যে, কেরলের নেতারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও সিপিএমের পলিটব্যুরো এখনও তাঁর পক্ষ সমর্থনে এগিয়ে আসেনি।

Advertisement

কেরলের কান্নুর জেলায় সিপিএমের নানা সংগঠনের সঙ্গে আরএসএসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেড়েই চলেছে। দু’তরফেই প্রাণহানির ঘটনা বিস্তর। বিজেপি এবং আরএসএস সম্প্রতি দাবি করেছে, হিংসা নিয়ন্ত্রণে আনার স্বার্থে কান্নুরে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন (আফস্পা) জারি করা হোক। প্রত্যাশিত ভাবেই যে দাবির প্রবল বিরোধিতা করছে পিনারাই বিজয়নের সরকার।

কিন্তু তার মধ্যেই বালকৃষ্ণনের মন্তব্য বিজেপি-র হাতে নতুন হাতিয়ার তুলে দিয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বালকৃষ্ণনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার দাবি তুলে পথে নেমেছে বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও বালকৃষ্ণনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন ও শাসক দলের রাজ্য সম্পাদক বালকৃষ্ণন, দু’জনেই কান্নুর জেলার নেতা। নিজের জেলায় আফস্পা জারির দাবি সম্পর্কে দিনকয়েক আগে একটি আলোচনাসভায় বলতে গিয়ে বালকৃষ্ণন টেনে আনেন কাশ্মীর ও নাগাল্যান্ডের উদাহরণ। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘ওই সব রাজ্যে আফস্পা জারি হয়েছিল। সেনার হাতে সব ক্ষমতা দিয়ে দিলে কী হয়, জানেন তো? রাস্তায় চার জন একসঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকলে সেনা তাদের গুলি করতে পারে। এমনকী, কোনও মহিলাকে টেনে গিয়ে ধর্ষণ করতে পারে। কারও কিছু করার থাকবে না।’’ সংখ্যালঘু মহিলারা বিশেষ করে সেনার অত্যাচারের শিকার, এমন মন্তব্যও করেন বালকৃষ্ণন।

তাঁর ওই মন্তব্যের জেরে সিপিএমকে সরাসরি ‘পাকিস্তানের মুখপাত্র’ আখ্যা দিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। গোটা দেশের মতো কেরলেও এখন অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে গেরুয়া শিবির। সেই সময়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের ওই মন্তব্য বিজেপি-কে জাতীয়তাবাদী হাওয়া তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে বলে মেনে নিচ্ছেন বাম নেতাদের একাংশও। পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আফস্পা আইনটি অবশ্যই বিতর্কিত। ওই আইন লোপ করে দেওয়ার দাবিও অনেক দিনের। কিন্তু সেনা সম্পর্কে এমন অসতর্ক মন্তব্য বাঞ্ছনীয় নয়।’’ পরিস্থিতি যে দিকে গড়িয়েছে, আগামী ৬-৭ জুন পলিটব্যুরোর বৈঠকে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হতে পারে বালকৃষ্ণনকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement