ছবি: পিটিআই।
ঠিক এক সপ্তাহ পরে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন। অযোধ্যা রায়ের পরে প্রথম বার। কী অবস্থান নেন সদ্য গত কাল মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া উদ্ধব ঠাকরে, তা দেখতে এখন ওত পেতে আছে বিজেপি।
শপথের ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। কংগ্রেস-সেনা জোটে চিড় ধরাতে নেমে পড়েছে বিজেপি শিবির।
গত কালই বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘উদ্ধব ঠাকরে তো অযোধ্যা যাচ্ছিলেন গত সপ্তাহে। সফর চূড়ান্ত ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে সফর বাতিল করেছেন।’’ কাল রাতেই মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলন করেন উদ্ধব। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘তা হলে কি শিবসেনা এখন ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে গেল?’’ প্রশ্নে বেশ চটে যান উদ্ধব। বলেন ‘‘ধর্মনিরপেক্ষ বলতে কী বোঝেন?’’ সামলে নেন পাশে বসা এনসিপি-র ছগন ভুজবল। বলেন, সংবিধানে যা লেখা আছে, সেটিই।
আরও পড়ুন: অবিশ্বাস আর আতঙ্কে কমছে বৃদ্ধি: মনমোহন
বিজেপি নেতৃত্ব জানেন, শিবসেনার ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ নিয়েই প্রশ্ন আছে কংগ্রেসে। তার আর একটি কারণ, কংগ্রেসের সংখ্যালঘু ভোটে থাবা পড়ার আশঙ্কা। বাস্তব পর্যালোচনা করে সনিয়া গাঁধী সায় দিলেও আপত্তি আছে রাহুলের। সে কারণে চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানালেও গত কাল শপথ মঞ্চে থাকলেন না গাঁধী পরিবারের কেউ। বিজেপি সুকৌশলে সেখানেই আঘাত করতে চাইছে। সেনার গায়ে ‘সংখ্যালঘু-প্রেম’ আর কংগ্রেসের গায়ে ‘হিন্দু-প্রেম’-এর তকমা সাঁটতে চাইছেন শাহ।
অমিত শাহ গত কালই বলেন, ‘‘আমাদের দলের এক সাংসদ কংগ্রেসের এক সাংসদকে বলেছেন, কংগ্রেসের মুখ থেকে অবশেষে ‘জয় শ্রীরাম’ বলিয়েই দিলাম। এ বারে কংগ্রেসও অযোধ্যায় গগনচুম্বী রামমন্দিরের দাবি তুলুক। উদ্ধব ঠাকরে তো অযোধ্যা সফর বাতিল করছেন!’’ আর আজ বিজেপির মুখপাত্র জিভিএল নরসিংহ রাও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার জন্য ‘গডসে-ভক্ত’ উদ্ধব ঠাকরেকে অভিনন্দন। আপনি ও আপনার বিধায়কেরা ‘সালতানাত’-এর আনুগত্য স্বীকার করলেন। এই আত্মসমর্পণ পূর্ণ করতে শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’র নাম বদলে এ বারে ‘সনিয়ানামা’ হোক।’’
সংসদেও আজ প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুরকে নিয়ে বিতর্কের সময় বিজেপির সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেন, ‘‘শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’-তেই সঞ্জয় রাউত এক সময়ে গডসেকে ‘দেশভক্ত’ লিখেছেন। আজ তাঁদের সঙ্গেই মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছে কংগ্রেস।’’ কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘কে কবে কোথায় কী বলেছেন, তা নিয়ে এখন কেন আলোচনা হচ্ছে?’’ কংগ্রেস থেকে শিবসেনায় যাওয়া নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, ‘‘বিজেপি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক!’’