এসআই-কে মারধর করছেন বিজেপি নেতা।
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ খাবার পৌঁছয়নি টেবিলে। ধৈর্য্য হারিয়ে রেস্তরাঁর মালিকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাতে মার জুটল সাব ইনস্পেক্টরের কপালে। তাও আবার উর্দি পরা অবস্থায়। বাদ গেলেন না তাঁর সঙ্গী এক মহিলা আইনজীবীও। দু’জনকে বেধড়ক মারধর করলেন স্থানীয় বিজেপি কাউন্সিলর তথা ওই রেস্তরাঁর মালিক মণীশ চৌধুরী।এই ঘটনায় রেস্তরাঁ মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তরপ্রদেশের মেরঠের একটি রেস্তরাঁয় ঘটনাটি ঘটেছে।
পেশায় আইনজীবী এক মহিলার সঙ্গে ওই রেস্তরাঁয় খেতে ঢোকেন মহিউদ্দিনপুর পুলিস ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার সুখপাল সিংহ পওয়ার। রেস্তরাঁয় ঢুকেই খাবারের অর্ডার দেন তাঁরা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খাবার পরিবেশন করতে বলেন।
কিন্তু অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও খাবার এসে পৌঁছয়নি। তাই নিয়ে রেস্তরাঁ কর্মীদের সঙ্গে বচসা বাঁধে ওই মহিলা আইনজীবীর। চিৎকার করেন তিনি। তাতেই পরিস্থিতি চরমে ওঠে। ঘটনার সময় রেস্তরাঁর মালিক মণীশ চৌধুরী সেখানে হাজির ছিলেন। চিৎকার, চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন তিনি। ওই মহিলার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন।
দেখুন পুলিশকে মারধর করার সেই ভিডিয়ো
আরও পড়ুন: শহিদের বেদি ভেঙে রামমন্দিরের ভিত
সেই সময় মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসেন এসআই সুখপাল সিংহ পওয়ার। তাতে শান্ত হওয়া তো দূর, উল্টে তাঁর ওপরই চড়াও হন মণীশ। অভিযোগ, তাঁকে এলোপাথাড়ি ভাবে চড়, থাপ্পর কষাতে শুরু করেন। এমনকি ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলেও দেন। রেস্তরাঁর কর্মীদের মধ্যে কেউ তাঁকে বাধা দিতে এগিয়ে তো আসেইনি। বরং তাদের মধ্যে একজন আবার ওই মহিলাকে মারধর করতে শুরু করে। চেষ্টা করে হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিতে।
ঘটনাস্থলে হাজির এক ব্যক্তি নিজের মোবাইল ফোনে গোটা ঘটনা ভিডিয়ো রেকর্ড করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিয়োটি। সংবাদমাধ্যম মারফত সেটি হাতে পায় পুলিশ। দশহরার নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যস্ততা সামলে রেস্তরাঁয় হাজির হয় তাদের একটি দল। সেখান থেকে মণীশ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে।
তবে সেখানেই ঝামেলা মেটেনি। বিজেপি কাউন্সিলরের গ্রেফতারির খবর পেয়ে কাঙ্কেরখেরা থানা ঘেরাও করেন তাঁর সমর্থকরা। হুজ্জুতি শুরু করে। তবে এখনও জেলেই রয়েছেন মণীশ চৌধুরী। ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ৩৯৫ এবং ৩৫৪ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। এসআই পওয়ার এবং ওই মহিলা আইনজীবী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে আরও একটি এফআইআর দায়ের হবে।
আরও পড়ুন: এ বার এয়ার ইন্ডিয়ার তদন্তে ইডি
তবে এসআই পওয়ারের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন মেরঠের এডিজি প্রশান্ত কুমার। তিনি জানিয়েছেন, ওই এসআই কর্তব্যে গাফিলতি করেছেন। গোটা এলাকার পুলিশ যখন রাবণ দহন নিয়ে নিরাপত্তার কাজে ব্যস্ত ছিল, তখন উনি নিজের এলাকাতেই ছিলেন না।মদ্যপান করে রেস্তরাঁয় ঢুকেছিলেন বলেও এসআই চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে।