প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। —ফাইল চিত্র।
দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নেতৃত্বে বিজেপি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার বিরুদ্ধে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ তুলল। বিজেপির অভিযোগ, রাজস্থানে গিয়ে প্রিয়ঙ্কা ধর্মীয় ভাবনা নিয়ে রাজনীতি করেছেন। পাল্টা জবাবে কংগ্রেস আজ নির্বাচনে কমিশনে খোদ অমিত শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। কংগ্রেসের দাবি, শাহ ভারতীয় দণ্ডবিধি, জন প্রতিনিধিত্ব আইন ও আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। দশেরা মিটতেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ময়দানে প্রচারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের দরবারেও দুই প্রধান দলের লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে।
কিছু দিন আগে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা রাজস্থানে ভোটের প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন, তিনি টিভিতে দেখেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেবনারায়ণ মন্দিরে গিয়ে প্রণামীর বাক্সে খাম ফেলে এসেছিলেন। সেই খাম খুলে মাত্র ২১ টাকা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সত্যমিথ্যা তাঁর জানা নেই বললেও প্রিয়ঙ্কার মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এই রকমই খাম দেখাচ্ছেন। ভোটের পরে দেখা যাবে, সেই খামে আসলে কিছু নেই।’’
আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী, অর্জুন রাম মেঘওয়ালের নেতৃত্বে বিজেপি নেতারা কমিশনে প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে যান। মেঘওয়াল সেখানে বলেন, “কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা ২০ অক্টোবর ধর্মের নামে বিবৃতি দিয়ে নির্বাচনী প্রচার করেছিলেন। তিনি আদর্শ আচরণবিধি ও জন প্রতিনিধিত্ব আইন ভেঙেছেন। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশ্ন তুলেছি, প্রিয়ঙ্কা কি আদর্শ আচরণবিধির ঊর্ধ্বে? কমিশনের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছি আমরা।” বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, প্রিয়ঙ্কা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভুয়ো খবরও ছড়িয়েছেন।
বিজেপি নেতাদের দরবারের পরেই কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ, সলমন খুরশিদ, মানিকরাও ঠাকরে, উত্তম কুমার রেড্ডির নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে অমিত শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। তাঁদের যুক্তি, শাহ সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ে গিয়ে ভূপেশ বঘেল সরকারের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতি করার অভিযোগ জানিয়েছেন। ভূপেশ বঘেল সরকারের বিরুদ্ধে এক বিজেপি প্রার্থীর ছেলেকে পিটিয়ে মারার অভিযোগও তুলেছেন তিনি। কংগ্রেসের অভিযোগ, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও ছত্তীসগঢ়ে গিয়ে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেছেন। কংগ্রেসের এক জন সংখ্যালঘু প্রার্থীর বিরুদ্ধে কুকথা বলেছেন।
কংগ্রেস আগেই অভিযোগ তুলেছিল, মোদী সরকারের নয় বছরের কাজের সাফল্যের প্রচারে সরকারি আমলা ও সেনা জওয়ানদের মাঠে নামানো হচ্ছে। আজ নির্বাচন কমিশনে গিয়ে কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত আদর্শ আচরণবিধি তো বটেই, কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিসেস পরিচালন বিধিরও বিরুদ্ধে। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে একাধিক বিজেপি নেতা ভোটের প্রচারে গিয়ে বিজেপির বুথ কর্মীদের জন্য নগদ পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছেন। ওই প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলেরও দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস।