Bipin rawat

Bipin Rawat Helicopter Crash: সাড়ে ছ’হাজার ফুটে উঠে যান! এটিসি বললেও কেন ওঠেনি রাওয়তের কপ্টার

সুলুর থেকে ওড়ার পরে বায়ুসেনার কপ্টারটি প্রথমে তিন হাজার ফুট উপরে উঠে যায়। সুলুর, কুন্নুর ও তার আশপাশের এলাকা জুড়ে নীলগিরি পর্বতমালা।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:১১
Share:

কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে রাওয়তদের চপার। দুর্ঘটনার আগে ভিডিয়ো তুলেছিলেন কেউ। ভিডিয়োগ্রাফ

তামিলনাড়ুর পাহাড়ি এলাকায় বিপিন রাওয়তের হেলিকপ্টারের উচ্চতা কত ছিল? তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

Advertisement

সুলুর থেকে ওড়ার পরে বায়ুসেনার কপ্টারটি প্রথমে তিন হাজার ফুট উপরে উঠে যায়। সুলুর, কুন্নুর ও তার আশপাশের এলাকা জুড়ে নীলগিরি পর্বতমালা। হেলিকপ্টারকে তাই আরও কিছুটা উপর দিয়েই উড়ে যেতে বলা হয়।

এই এলাকাটি কোয়ম্বত্তূর বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর আওতায়। সেই বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার বিপিন রাওয়তের হেলিকপ্টারকে সাড়ে ছ’হাজার ফুট উপরে উঠে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, সুলুর এয়ারবেস-এর রেডারের ছবিতে যখন শেষ দেখা গিয়েছিল এমআই-কে, তখনও তার উচ্চতা ছিল চার হাজার ফুট। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার মানে, এটিসি-র পরামর্শ মতো নির্দিষ্ট উচ্চতায় হয় উঠতে চাননি পাইলট, নয়তো ওঠার আগেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। হতে পারে, তাঁর উপরে ওঠার গতিও ছিল তুলনায় শ্লথ। এ সব কিছুই এখন তদন্তসাপেক্ষ।

Advertisement

ওই হেলিকপ্টারের দুই পাইলট উইং কমান্ডার পি এস চৌহান এবং স্কোয়াড্রন লিডার কে সিংহ-র সঙ্গে কোয়ম্বত্তূর এটিসি-র অফিসারদের ঠিক কী কথাবার্তা হয়েছিল, তা যেমন ধরে রাখা আছে হেলিকপ্টারের ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে, তেমনই তা রয়েছে এটিসি-র অডিয়ো টেপ ট্রান্সক্রিপ্টে। সেই টেপের বিবরণ এবং রেডারের ভিডিয়ো ফুটেজ-ও এখন তদন্তের অংশ। অচিরেই তা দেওয়া হবে তদন্তকারীদের হাতে।

বুধবার দুপুরে তামিলনাড়ুর কুন্নুরের কাছে নানজাপ্পান চাথীরাম্-এ ভেঙে পড়ে বায়ুসেনার এমআই-১৭ হেলিকপ্টার। মারা গিয়েছেন ১৩ জন। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিংহ।

কোয়ম্বত্তূর বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সুলুর এয়ারবেস ছাড়াও ওই ভিভিআইপি হেলিকপ্টারের যোগাযোগে ছিল কোয়ম্বত্তূর এটিসি-র সঙ্গে। ১২টা ৮ মিনিটে এয়ারবেসের সঙ্গে যোগসূত্র বিচ্ছিন্ন হলেও তার পরে আরও ১ মিনিট কপ্টারের যোগাযোগ ছিল কোয়ম্বত্তূর এটিসি-র সঙ্গে। প্রথমে উচ্চতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয় পাইলটকে। বিমানবন্দরের অফিসারদের দাবি, ওই পাহাড়ি এলাকা দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ে উচ্চতা একটু বেশি থাকাই নিরাপদের। ওই সূত্র জানিয়েছে, মলপ্পুরমে এসে ওয়েলিংটনে সরাসরি রুটে যেতে চান পাইলট। সেই অনুমতিও দেওয়া হয় তাঁকে। দ্বিতীয় একটি ঘুরপথের রুট ছিল। তাতে সময় কিছুটা বেশিই লাগে। তবে, সে দিকটা কম ঝুঁকিপূর্ণ বলেই প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।

সরাসরি রুটে যাওয়ার পথে নেতুপাল্লামে এটিসি-র সঙ্গে আবার যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল পাইলটকে। একটি সূত্র জানিয়েছে, নেতুপাল্লামে এসে পাইলট যখন যোগাযোগ করেছিলেন, তখন তাঁর কপ্টারের উচ্চতা ছিল চার হাজার ফুট। তাঁকে সাড়ে ছ’হাজার ফুটে উঠতে বলার পর ততক্ষণে খানিকটা সময় কেটে গিয়েছে। নেতুপাল্লামেই শেষ কথা। তারপরে আর যোগাযোগ হয়নি পাইলটের সঙ্গে।

বিপদেই যদি পড়ে থাকেন, তা হলে পাইলট বিপদ সঙ্কেত পাঠাননি কেন ? চূড়ান্ত বিপদে তো পাইলটেরা ‘মে ডে’ কল করেন।

বিমান পরিবহণের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘‘হয়তো বিপদ এমন আচমকা এসেছিল, সঙ্কেত পাঠানোর সময়ই পাননি তিনি। দুই, নিজে সহকারী পাইলটকে নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন হেলিকপ্টারের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে। তখন সেই কাজেই তাঁরা ব্যস্ত ছিলেন। তিন, এটিসি-কে মে-ডে কল করলেই বা কী হত? এটিসি তাঁকে বাঁচাতে পারত? এই ধরনের ক্ষেত্রে বিমান বা হেলিকপ্টারের বাইরে আগুন লেগে গেলে কারও কিছু করার থাকে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement