অর্থমনর্থম। কখনও বাবার সঙ্গে ছেলে, কখনও বা দুই ভাই, কখনও বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মাত্র অর্থনৈতিক কারণেই বচসা গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। খুনোখুনিও বাদ যায়নি। এ বার ছেলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের পথে রেমন্ডস গোষ্ঠীর প্রাক্তন মালিক বিজয়পত সিংহানিয়া।
ছেলে গৌতমের হাতে ব্যবসায়িক মালিকানা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে এখন নিজের ‘চূড়ান্ত বোকামি’ বলেই দাবি করছেন ৮০ বছরের বৃদ্ধ।
২০১৫ সালে ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের ৩৭ শতাংশ মালিকানা ছেলে গৌতমকে দেন তিনি। এর পর মুম্বইয়ের অভিজাত এলাকা মালাবার হিলে সিংহানিয়া পরিবারের ৩৬ তলা বহুতলে ৫,১৮৫ বর্গফুট আয়তনের একটি ডুপ্লে অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত।
বিজয়পত সিংহানিয়ার অভিযোগ, অন্য আত্মীয়দের সঙ্গে তাঁকেও ওই কোটি কোটি টাকার ডুপ্লের মালিকানা থেকে বঞ্চিত করে গৌতম। ড্রাইভার-সহ গাড়ির সুবিধাও কেড়ে নেওয়া হয়। ভাড়াবাড়িতে থাকতে বাধ্য হন তিনি।
গৌতমের পরামর্শেই নাকি বিজয়পতের ‘চেয়ারম্যান এমেরিটাস’ পদ কেড়ে নেওয়া হয়। তাঁকে রেমন্ডের বোর্ড থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়।যদিও গৌতম বলেছেন, ‘‘রেমন্ডেসের বোর্ড থেকে বাবাকে সরানোর সিদ্ধান্ত সঠিক।’’
শুধুমাত্র একটি ডুপ্লে নিয়ে আইনি লড়াই নয়, ৯৩ বছরের পুরনো ব্যবসার মাথা থেকেও ছেলেকে সরাতে চান বিজয়পত। মামলা চলছে আদালতে। এ রকম আরও বেশ কিছু লড়াই রয়েছে ভারতীয় শিল্প মহলে।
বাবা ধীরুভাই অম্বানী কোনও ইচ্ছাপত্র (উইল) রেখে যাননি। ধীরুভাইয়ের মৃত্যুর পর সম্পত্তির দখল নিয়ে দুই ভাই আইনি লড়াইতেও জড়িয়ে পড়েন।
শেষ পর্যন্ত আসরে নামেন তাঁদের মা কোকিলাবেন অম্বানী। তাঁর মধ্যস্থতায় ২০০৫ সালে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের শেষ হয়। যদিও ধীরুভাইয়ের রিলায়্যান্স সাম্রাজ্য ভাগ হয়ে যায় দুই ভাইয়ের মধ্যে।
মুকেশের দখলে যায় তৈল শোধনাগার, পেট্রোকেমিক্যালস সংস্থাগুলি। অনিলের হাতে যায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ও আর্থিক সংস্থাগুলি। ফোন আর মোবাইল কানেকশন এক সঙ্গে দিয়ে প্রতিযোগীদের পিছনে ফেলে দিয়েছিল মুকেশ নেতৃত্বাধীন রিলায়্যান্সের টেলিকমিউনিকেশন সংস্থা। সেই কোম্পানিও পান অনিল।
লিকার ও রিয়্যাল এস্টেট ব্যারন পন্টি চাড্ডা ও হরদীপ চাড্ডার মধ্যে আর্থিক লড়াই পৌঁছেছিল খুনোখুনিতে। দিল্লির ফার্ম হাউসে শুট আউটে দু’জনই মারা যান পরস্পরের গুলিতে। দশ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির লড়াই নিয়ে বিবাদ শুরু হয়েছিল।
শিবেন্দ্র ও মালবেন্দ্র সিংহের লড়াই কয়েক হাজার কোটির ওষুধ ও হাসপাতালের ১৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসাকে ঘিরে। আইনি লড়াই তো হয়েইছে, পরস্পরের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগও এনেছিলেন।