গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগেছিল মোটরবাইকের। এই অপরাধে দুই সন্তানের সামনেই মোটরবাইক আরোহীকে পিটিয়ে খুন করল কয়েক জন। কাল রাত সাড়ে এগারোটার সময় এই ঘটনা ঘটেছে মধ্য দিল্লির তুর্কম্যান গেটের সামনে। খুনের অভিযোগে পুলিশ আজ এক জনকে গ্রেফতার করেছে।
গত কাল রাতে চাঁদনি মহল এলাকায় বাবা-মায়ের বাড়ি থেকে ফিরছিলেন মহম্মদ শাহনওয়াজ। সঙ্গে দুই ছেলে ফাহাদ(১৩) ও কাইফ(৯)। রাস্তায় একটা গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁর মোটরবাইকের। এই নিয়ে গাড়ির দুই আরোহীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয় শাহনওয়াজের। কিছু ক্ষণ পরে তিন বন্ধুকে ফোনে ডেকে আনেন ওই দুই ব্যক্তি। বিয়েবাড়ি সেরে ফেরার পথে এমন কাণ্ড দেখে সেখানে দাঁড়িয়ে পড়েন আরও পাঁচ জন। শাহনওয়াজকে ঘিরে ধরে লোহার রড দিয়ে হঠাৎই মারতে শুরু করেন পথচলতি ওই পাঁচ জন।
মিনিট পনেরো ধরে বাবাকে ওই ভাবে মার খেতে দেখে প্রথমে আক্রমণকারীদেরই থামতে অনুরোধ করে দুই খুদে। কিন্তু তার পরও মারধর চলতে থাকায় রাস্তার উল্টো দিকে পুলিশ ফাঁড়িতে ছুটে যায় ফাহাদ ও কাইফ। তাদের সাহায্যের জন্য সে সময় সেখানে ছিলেন না কেউই। শেষমেশ ঠাকুমা-দাদুর বাড়িতেই খবর দিতে যায় শাহনওয়াজের বড় ছেলে। তাঁরা এসে ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু তার আগেই মৃত্যু হয় শাহনওয়াজের। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, এই খুনে জড়িতরা এলাকায় দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত। ওয়াসিম নামে এদের দলের এক জনকে আজ ধরেছে পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ কমিশনার এ দিন জানান, দুর্ঘটনার জেরেই এমন কাণ্ড নাকি এর পিছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা আছে— তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। এর সঙ্গে জড়িয়েছে রাজনীতির রং-ও। এলাকার প্রাক্তন বিধায়কের দাবি, অভিযুক্তরা আপ বিধায়ক ও মন্ত্রী আসিম আহমেদের সমথর্ক। সন্দেহভাজনদের নাম দিয়ে এলাকায় পোস্টারও লাগিয়েছেন তিনি। পুলিশের অবশ্য দাবি, পোস্টারের ওই ছবির সঙ্গে অভিযুক্তদের মিল নেই। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রকাশ্য রাস্তায় এ ভাবে পিটিয়ে খুনের পর তুর্কম্যান গেট এলাকায় এখনও উত্তেজনা রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়ানো হয়েছে পুলিশি প্রহরা।