Bihar Election 2020

খুন-অপহরণ-ধর্ষণের ভূরি ভূরি মামলা, বিহারে প্রার্থী তালিকায় মাফিয়ার ছড়াছড়ি

আরজেডি প্রার্থী অনন্ত সিংহের বিরুদ্ধেই শুধুমাত্র ৩৮টি মামলা ঝুলছে। এর মধ্যে খুনের মামলা ৭টি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পটনা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ১৪:২৪
Share:

অনন্ত সিংহ, সুনীল পান্ডে, সুরেন্দ্র যাদব।

আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে কার্যত ‘ধর্মযুদ্ধ’-এর প্রস্তুতি চলছে বিহারে। কিন্তু যাঁদের কাণ্ডারী করে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলি, তাদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে খুন, জালিয়াতি এবং রাহাজানির মতো গুরুতর অপরাধ মামলা চলছে। এ ব্যাপারে বিজেপি ও কংগ্রেস খানিকটা গা বাঁচিয়ে চললেও, লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ) একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছে।

আগামী ২৮ অক্টোবর থেকে তিন দফায় বিধানসভা নির্বাচন বিহারে। তার আগে নির্বাচন কমিশনের নিয়মাবলী মেনে দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে থাকা অপরাধের তালিকা প্রকাশ করতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। তাতেই বিষয়টি সামনে এসেছে। এর মধ্যে আরজেডি-র যে সমস্ত নেতার নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অনন্ত সিংহ। এ বছর তাঁকে মোকামা থেকে দাঁড় করানো হয়েছে।

১টা বা ২টো নয়, সবমিলিয়ে অনন্তের বিরুদ্ধে মোট ৩৮টি গুরুতর অপরাধের মামলা ঝুলছে। এর মধ্যে খুনের মামলাই রয়েছে ৭টি। এ ছাড়াও রয়েছে অপহরণ, জমি দখল, শ্লীলতাহানি এবং খুনের চেষ্টার মতো মামলাও। ২০০৭ সালে রেশমা খাতুন নামের একটি মহিলার শ্লীলতাহানি এবং খুনের মামলায় নাম জড়ায় অনন্তের। সেই নিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে গেলে দুই সাংবাদিককে তিনি নিজের বাংলোয় পণবন্দি করেন বলেও শোনা যায়।

Advertisement

প্রার্থী পিছু অপরাধের এই তালিকাই প্রকাশ করেছে আরজেডি।

আরও পড়ুন: চিন্ময়ানন্দ ‘যৌন নির্যাতন’ মামলায় নাটকীয় মোড়, পিছু হটলেন ছাত্রী​

Advertisement

এত কিছুর পরেও বরাবর রাজনৈতিক দলগুলি অনন্তকে আড়াল করে এসেছে। একসময় নীতীশ কুমারেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এমনকি জেডিইউয়ের টিকিটে ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন। পরে সেই সম্পর্কে ছেদ পড়ে। তবে তার জন্য রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা থেকে কখনওই বঞ্চিত হননি অনন্ত। তাঁর স্ত্রী নীলমদেবীও নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

অনন্তকে প্রার্থী করায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে বিহারে। কিন্তু আরজেডি-র যুক্তি, অন্যদের চেয়ে ঢের বেশি জনপ্রিয়তা অনন্ত সিংহের। দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষের একমাত্র সহায় তিনি। তাঁকে দাঁড় করানোর অর্থ জয় একরকম নিশ্চিত। তবে অনন্ত একা নন, আরজেডির বেলাগঞ্জের প্রার্থী সুরেন্দ্র যাদব, শাহপুরের প্রার্থী রাহুল তিওয়ারি, জামুইয়ের প্রার্থী বিজয় প্রকাশ, নোখার প্রার্থী অনিতাদেবী, দেহরির প্রার্থী ফতেহ বাহাদুর সিংহ-সহ কমপক্ষে আরও ২০ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে তোলাবাজি, প্রতারণা এবং হামলা চালানোর মতো গুরুতর মামলা রয়েছে।

এ নিয়ে আরজেডি-র উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন জেডিইউ মুখপাত্র রাজীব রঞ্জন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘আরজেডি যে তথ্য তুলে ধরেছে, তাতেই ওদের দলের চরিত্র বোঝা যাচ্ছে। খুন এবং তোলাবাজির অভিযোগ থাকলেও, ওই সমস্ত লোকজন জনপ্রিয়। সেই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আসন জেতাই লক্ষ্য ওদের। এতেই বোঝা যায় বিকাশ ঘটলেও, আরজেডি আগের জায়গাতেই রয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ভেসে যাচ্ছে মানুষ, ভাসছে গাড়ি, বৃষ্টিতে ভয়াল অবস্থা হায়দরাবাদের​

কিন্তু মুজফ্ফরপুর শেলটার হোম–কাণ্ডে অভিযুক্ত মঞ্জু বর্মাকে যারা টিকিট দিয়েছে, তাদের অন্য কোনও দলের সমালোচনা করা চলে না বলে জেডিইউ-কে পাল্টা আক্রমণ করেন আরজেডি মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি। মঞ্জু বর্মা ছাড়াও, অমরেন্দ্র পান্ডে, মনোরমা দেবী-র মতো একাধিক অপরাধে অভিযুক্তদের ভোটে দাঁড় করিয়েছে জেডিইউ। গোপালগঞ্জের তিন খুনের মামলায় স্থানীয় আরজেডি নেতার মা-বাবা এবং ভাইকে খুনে অভিযুক্ত অমরেন্দ্র পান্ডে। মাফিয়া ডন বিন্দি যাদবের স্ত্রী মনোরমাদেবীকে আত্রি থেকে দাঁড় করানো হয়েছে।

লোক জনশক্তি পার্টির (এলজেপি) চার বারের বিধায়ক সুনীল পান্ডে এ বার নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। ২০১২ সালে রণবীর সেনার প্রধান ব্রহ্মেশ্বর মুখিয়া হত্যায় নাম জড়িয়েছিল তাঁর। কুখ্যাত ডন মুখতার আনসারির খুনে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। একে-৪৭ রাখা নিয়ে এই মুহূর্তে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement