বাঁ দিকে নীতীশ কুমার, ডান দিকে লালুপ্রসাদ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
কখনও দ্বৈরথ। কখনও যুগলবন্দি। পাঁচ দশক ধরে বিহারের রাজনীতিতে বারে বারেই এমন বিপরীত ভূমিকায় দেখা গিয়েছে প্রয়াত জয়প্রকাশ নারায়ণের (জেপি) দুই ভাবশিষ্যকে। প্রথম জন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ। দ্বিতীয় জন, গত দু’দশকের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ সভাপতি নীতীশ কুমার। বৃহস্পতিবার লালুর মন্তব্য উস্কে দিল নীতীশের পঞ্চম বার জোট বদলানোর জল্পনা।
লালু বৃহস্পতিবার সকালে জানান, বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র দরজা নীতীশের জন্য খোলা রয়েছে! চলতি বছরেই বিহারে বিধানসভা ভোট। তার আগে লালুর এই মন্তব্য ঘিরে আলোচনা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে লালুর এই মন্তব্য সম্পর্কে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে নীতীশ কিছুটা রুষ্ট ভাবেই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘‘আপনারা কী বলতে চাইছেন?’’ যদিও সরাসরি দু’বছর আগে তাঁরই গড়া বিরোধী জোটে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা সরাসরি খারিজ করেননি তিনি। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যা আলোচনার খোরাক হয়েছে।
সত্তর দশকে পটনায় জেপির আহ্বানে ইন্দিরা গান্ধী বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন দু’জনেই। জরুরি অবস্থার সময় কারাবন্দিও হন। পরবর্তী কালে অবিভক্ত জনতা পরিবারের রাজনীতিতেও একই সঙ্গে পদার্পণ করেন লালু-নীতীশ। তখন তাঁরা ছিলেন ‘অভিন্নহৃদয়’। ১৯৯০ সালে বিহারের বিধানসভা ভোটে জনতা দলের বিপুল জয়ের পরে লালুর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল নীতীশের। কিন্তু নব্বইয়ের দশকের গোড়া থেকেই লালু-নীতীশের সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করে। লালুর সঙ্গে বিরোধের জেরেই ১৯৯৪ সালে জনতা দল ছেড়ে জর্জ ফার্নান্ডেজ়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সমতা পার্টি গড়েছিলেন নীতীশ। তার এক দশক পরে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে পটনার কুর্সি ছিনিয়ে নিয়েছিলেন যাদব পরিবারের থেকে। তবে ২০১৫ এবং ২০২২ সালে পদ্ম ছেড়ে লালুর সঙ্গে জোট গড়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন নীতীশ। আবার এনডিএ-তে ফিরেও গিয়েছেন। এ বার কি তৃতীয়-সখ্যের পালা?