কাটিহারে প্রচারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ছবি: পিটিআই।
বিহারে শেষ দফা ভোট আগামী শনিবার। তার ঠিক আগে আজ সীমান্ত প্রশ্নে নাম না করে বেজিংকে বার্তা দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতোই তিনিও অবশ্য চিনের নাম করেননি।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘‘সম্প্রতি সীমান্তে অন্য ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ভারত। (সীমান্ত) মতপার্থক্য শেষে বিবাদে পরিণত হোক, ভারত তা মোটেই চায় না। কিন্তু আগ্রাসন হলে ভারত তার সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।’’ বিহারের শেষ দফা ভোটের ঠিক আগে লাদাখ প্রশ্নে রাজনাথের এই ‘কড়া’ বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনীতির অনেকে। যদিও বিরোধীরা বলছেন, শেষ দফাতেও জাতীয়তাবাদেরই জিগির তুলে ভোটে যাচ্ছে বিজেপি। রাজনাথের মন্তব্য তারই ইঙ্গিত।
আবহাওয়া ঠিক থাকলে আগামিকাল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা প্রত্যাহার নিয়ে অষ্টম দফা বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত ও চিনের সেনা-আধিকারিকেরা। তার ঠিক এক দিন আগে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের হীরক জয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আজ ওই বার্তা দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলছেন, গত জুন মাসে লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে যে ভারতীয় সেনারা মারা যান, তাঁরা সকলেই ছিলেন ১৬,বিহার রেজিমেন্টের সদস্য। নামে বিহার রেজিমেন্ট হলেও তাতে ভারতের একাধিক প্রদেশেরই জওয়ান ছিলেন। কিন্তু ‘বিহার রেজিমেন্ট’ নামটিকে কাজে লাগাতে প্রথম থেকেই তৎপর বিজেপি।
বিহারে তৃতীয় দফা ভোটের আগে লাদাখের সংঘর্ষের উল্লেখ করে সেই বিহার-আবেগ উস্কে দিতে চেয়েছেন রাজনাথ। সে কারণে আজ নিজের বক্তব্যে একাধিক বার লাদাখের বিষয়টি তুলে আনেন তিনি। লাদাখ সীমান্তের সাম্প্রতিক অশান্তির কথা উল্লেখ করে রাজনাথ বলেন, ‘‘কোনও ধরনের চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না ভারত। দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বদ্ধপরিকর এই দেশ।’’
তবে বিবাদ মেটাতে আলোচনার উপরেও জোর দিয়েছেন রাজনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজাই আমাদের লক্ষ্য। সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার প্রশ্নে বিভিন্ন চুক্তি ও প্রটোকল মেনে চলার পক্ষপাতী এ দেশ।’’ তিনি দাবি করেন, আগামী দশকে ভারতের জাতীয় সুরক্ষা নীতি কোন খাতে এগোবে তার বিস্তারিত রূপরেখা গত ছয় বছরে তৈরি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
আজ পাকিস্তানের প্রসঙ্গ নিয়েও সরব হয়েছেন রাজনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘রাষ্ট্রীয় নীতি হিসাবে সন্ত্রাসবাদকে এখনও পাকিস্তান মদত দিয়ে চলেছে। যদিও সন্ত্রাসবাদ রোখার প্রশ্নে একমাত্র পাকিস্তান বাদে অন্য সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে নয়াদিল্লি।’’ সন্ত্রাসবাদে রাষ্ট্রীয় মদত দেওয়ার কারণে নজরদারি সংস্থা এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান। বেড়েছে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা। আজ সেই বিষয়টি উল্লেখ করে রাজনাথ বলেন, ‘‘প্রগতিশীল ও সমমনোভাবাপন্ন দেশগুলির সঙ্গে এক যোগে কাজ করে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দেওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি তাদের উপর নজরদারি বাড়ায় আগের মতোই সন্ত্রাসে সরাসরি মদত
দেওয়া পাকিস্তানের পক্ষে কঠিন করে তুলেছে নয়াদিল্লি।’’