দক্ষিণের ‘বন্ধু’র ডাকে কাশ্মীরের জন্য এ বার একমঞ্চে বাম-তৃণমূল

এম করুণানিধির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মমতার সাম্প্রতিক চেন্নাই সফরের সময়েই কথা হয়েছিল, অ-বিজেপি দলগুলির মধ্যে এখন সেতুবন্ধনে উদ্যোগী হবে ডিএমকে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪৮
Share:

মমতার সাম্প্রতিক চেন্নাই সফরের সময়েই কথা হয়েছিল, অ-বিজেপি দলগুলির মধ্যে এখন সেতুবন্ধনে উদ্যোগী হবে ডিএমকে। ছবি: পিটিআই।

দক্ষিণের ‘বন্ধু’র ডাকে উত্তরের জন্য হাতে হাত তৃণমূল এবং সিপিএমের!

Advertisement

সংসদে জম্মু ও কাশ্মীর সংক্রান্ত বিল পাশের সময়ে তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে এখনও প্রশ্ন তোলা ছাড়েনি সিপিএম। কিন্তু সেই কাশ্মীরেই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে আটক বা গৃহবন্দি রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে ধর্নায় একসঙ্গেই সামিল হতে চলেছে বাংলার যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ। দিল্লির যন্তর মন্তরে কাল, বৃহস্পতিবার চার ঘণ্টার ওই ধর্না-অবস্থানের উদ্যোক্তা ডিএমকে। তাদের আমন্ত্রণ স্বীকার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সীতারাম ইয়েচুরি। তবে রাজ্যে প্রশাসনিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা নিজে দিল্লি যাচ্ছেন না। তাঁর নির্দেশে ধর্নায় প্রতিনিধিত্ব করবেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী। ইয়েচুরি অবশ্য নিজেই থাকবেন। প্রতিনিধি পাঠাবে কংগ্রেসও।

এম করুণানিধির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মমতার সাম্প্রতিক চেন্নাই সফরের সময়েই কথা হয়েছিল, অ-বিজেপি দলগুলির মধ্যে এখন সেতুবন্ধনে উদ্যোগী হবে ডিএমকে। কংগ্রেস, বাম ও তৃণমূলের মতো অ-বিজেপি শক্তিগুলিকে তারা বিভিন্ন প্রশ্নে একজোট করার চেষ্টা করবে। চেন্নাইয়ের পরে এ বার দিল্লিতে জাতীয় স্তরে সেই চেষ্টারই প্রথম ফসল ফলতে চলেছে যন্তর মন্তরে। ডিএমকে সভাপতি এম কে স্ট্যালিনের বক্তব্য, ‘‘কাশ্মীরে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকে অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ ভাবে আটক করে রাখা হয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশে। তাঁদের মুক্তির দাবিতে দিল্লিতে প্রতিবাদ-অবস্থানে আমরা সমমনোভাবাপন্ন দলগুলিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’’ তাঁর সংযোজন, কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের গোটা পদক্ষেপেরই তাঁরা বিরোধী।

Advertisement

সিপিএমও কেন্দ্রের কাশ্মীর সিদ্ধান্তের আগাগোড়া বিরোধিতায় সরব। তার আগে ডিএমকে এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেই তামিলনাড়ু থেকে সিপিএম ও সিপিআই দু’টি করে লোকসভা আসন জিতেছে। কোয়ম্বত্তূরের সিপিএম সাংসদ পি আর নটরাজন এবং রাজ্যসভার দলনেতা টি কে রঙ্গরাজনও কাল যন্তর মন্তরের ধর্নায় থাকতে পারেন। ইয়েচুরিদের যুক্তি, কাশ্মীরে গণতন্ত্র-হত্যার প্রতিবাদে এই অবস্থান। সেখানে কোনও নির্দিষ্ট দলকে নিয়ে আলাদা করে আপত্তির কারণ তাঁরা দেখছেন না। ইয়েচুরির কথায়, ‘‘ওই অবস্থানকে যৌথ কর্মসূচিই বলা যায়। আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিধায়ক ইউসুফ তারিগামিকে কাশ্মীরে আটক রাখা হয়েছে। গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতিনিধিদের মুক্তির দাবিতে এই অবস্থানে থাকব।’’ তারিগামির সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে শ্রীনগর বিমানবন্দরে আটকানো হয়েছিল ইয়েচুরি এবং সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজাকে। ধর্নায় রাজাও থাকবেন বলে সিপিআই সূত্রের খবর।

মমতার নির্দেশে দীনেশ যেমন ধর্নায় যাচ্ছেন, তেমনই সংসদের কমিটি বা অন্য কাজে দিল্লিতে থাকা তৃণমূল নেতাদেরও কাল অবস্থান-মঞ্চে ঘুরে আসতে বলা হয়েছে। দীনেশ বলছেন, ‘‘তিন-তিন জন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আটক রাখা হয়েছে। তাঁরা কোথায় কী ভাবে আছেন, তা-ও জানানো হয়নি! এই পরিস্থিতি গণতন্ত্রে চলতে পারে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement