রাহুল গাঁধী ও সত্যপাল মালিক। —ফাইল চিত্র
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে তাঁর মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছে পাকিস্তান। তাঁকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রপুঞ্জে চিঠিও দিয়েছে তারা। বিষয়টি চোখে পড়তেই তড়িঘড়ি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারের সঙ্গে যত বিরোধই থাক, কাশ্মীর যে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এ ব্যাপারে দ্বিমত নেই। তার পরেও শাসকদলের রোষ থেকে রক্ষা পেলেন না তিনি। অবিলম্বে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে ইতিমধ্যেই দাবি তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। এ বার রাহুলকে একহাত নিলেন জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকও। তাঁর দাবি, নাবালকের মতো আচরণ করছেন রাহুল।
উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেন সত্যপাল মালিক। সেখানে রাহুলের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘ওঁকে নিয়ে কোনও কথাই বলতে চাই না আমি। দেশের অন্যতম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান উনি। তা সত্ত্বেও নাবালক রাজনীতিকের মতো আচরণ করছেন। তাই রাষ্ট্রপুঞ্জকে দেওয়া চিঠিতে তাঁর মন্তব্য ব্যবহার করতে পেরেছে পাকিস্তান। এই ধরনের আচরণ করা একেবারেই উচিত হয়নি ওঁর।’’
শিমলা চুক্তি ও লাহৌর চুক্তির পরেও জম্মু-কাশ্মীর কী করে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হল, সংসদে এই প্রশ্ন তোলায় এর আগে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। তা নিয়েও এ দিন ফের একবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সত্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভায় নিজেদের দলনেতার সঙ্গেও কথা বলা উচিত ছিল রাহুল গাঁধীর। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা করেনি ওরা। আমার বলা উচিত নয়, কিন্তু নির্বাচনের সময় এটাকেই ওদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করবে বিরোধীরা। মানুষ ওদের জুতোপেটা করবেন।’’
আরও পড়ুন: নারদ-কাণ্ডে তৎপর সিবিআই, তলব শোভন-অপরূপাকে
আরও পড়ুন: কমতে পারে মধ্যবিত্তের করের বোঝা, ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে ১০ শতাংশ হারে করের প্রস্তাব
জম্মু-কাশ্মীরকে গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা নিয়ে লাগাতার বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস-সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলি। তার মধ্যেই উপত্যকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত শনিবার সেখানে হাজির হন রাহুল গাঁধী-সহ বিরোধী দলের নেতাদের একটি দল। কিন্তু উপত্যকায় তাঁদের পা রাখতে দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। শেষমেশ বিমানবন্দর থেকেই ফিরে আসতে হয় রাহুলদের। তাতে সত্যপাল মালিকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন রাহুল। তিনি প্রশ্ন তোলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কেন? বিমানবন্দরে যাত্রীদের মুখে যা শুনেছেন, তাতে উপত্যকার পরিস্থিতি ভয়াবহ বলে জানতে পেরেছেন, এমন মন্তব্যও করেন রাহুল।
রাহুলের এই মন্তব্যকেই সম্প্রতি হাতিয়ার করেন পাকিস্তানের মানবাধিকার মন্ত্রী শিরিন মাজারি। রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে ভয়াবহ, রাহুল গাঁধী-সহ ভারতের মূলধারার রাজনীতিকরাও তা মেনেছেন।’ এই চিঠি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় ভারতীয় রাজনৈতিক মহলে। যার পর টুইটারে বিবৃতি দেন রাহুল। সাংবাদিক বৈঠক করে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালাও।