টহল দিচ্ছে সেনা। শ্রীনগরে। ছবি: এএফপি।
কালকের সংঘর্ষের পরে শ্রীনগরের কয়েকটি এলাকায় ফের নিষেধাজ্ঞা জারি হল। ফলে কাশ্মীর উপত্যকায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া কার্যত ফের ধাক্কা খেল।
সরকারি তরফে স্বীকার করা হল যে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ লোপের পর থেকে জন নিরাপত্তা আইনে এ পর্যন্ত ৪ হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উপত্যকার জেলে আর জায়গা না থাকায় তাদের অনেককেই বিমানে কাশ্মীরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ইদের দিন থেকে ধীরে ধীরে কাশ্মীরে কার্ফু শিথিল করা হচ্ছিল। গত কাল রাজ্যে প্রায় ৫০ হাজার ল্যান্ডলাইন চালু হয়। কিন্তু নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনিক কর্তারা এ-ও জানিয়েছেন, গত কাল শ্রীনগরের রাইনাওয়ারি, নৌহাট্টা, গোজওয়ারা, সৌরা এলাকায় বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় জনতার। পরিস্থিতি সামলাতে কাঁদানে গ্যাস, চিলি গ্রেনেড ও ছররা ছোড়ে বাহিনী। শ্রীনগরের হাসপাতালে আনা হয়েছিল ছররায় আহত ১৭ জনকে। গুরুতর জখম পাঁচ জন এখনও হাসপাতালে। যদিও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের দাবি, ছ’টি এলাকায় সংঘর্ষে আহত ৮।
এর পরেই আজ ফের নিষেধাজ্ঞা জারি হয় শ্রীনগরে। শহরের নানা অংশে আজ গতিবিধির উপরে নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়। আজ শ্রীনগরের অভিজাত রাজবাগ এলাকা থেকে পুরনো শ্রীনগরে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের জাভেদ আহমেদ। শহরের কেন্দ্রে ব্যারিকেড বসিয়েছিল আধাসেনা। সেখানেই আটকে দেওয়া হয় জাভেদকে। তিনি বললেন, ‘‘বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলাম। কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা রাস্তায় আধাসেনারা আটকে দিলেন। বললেন ওই এলাকায় কার্ফু আছে।’’
জম্মুতেও আজ ফের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়। সূত্রের খবর, সেখানে আজ একটি বাইক মিছিল করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরঙ্গ দল। সেই মিছিলের সময়ে শান্তি বজায় রাখতেই এই পদক্ষেপ করা হয়। এ বাদে উপত্যকার ৫০টি থানা এলাকায় অবশ্য কার্ফু শিথিল করা হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। শ্রীনগরের জেলাশাসক শাহিদ চৌধুরি আজ টুইটারে জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের বৈঠক
হয়েছে। সোমবার থেকে শ্রীনগরে ১৯০টি প্রাথমিক স্কুল খুলবে। আজ সৌদি আরব থেকে কাশ্মীরে ফেরেন ৩০০ জন হজযাত্রী। তাঁদের জন্য বিপুল নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। বিমানবন্দরে তাঁদের অভ্যর্থনা জানান রাজ্যপালের পরামর্শদাতা ফারুক খান।