সেনা টহল কাশ্মীরে। ফাইল চিত্র।
ঘরে-বাইরে আক্রমণের মুখে এ বার দেশের মানুষকে কাশ্মীর নিয়ে বোঝাতে পথে নামছে বিজেপি। কাশ্মীরে কেন ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করা হল, গোটা সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে তা দেশবাসীকে বোঝাতে জনজাগরণ যাত্রা শুরু করবে তারা। সব রাজ্যের রাজধানী ও গুরুত্বপূর্ণ শহরে আমজনতা ও বিশিষ্ট জনেদের কাছে কাশ্মীর সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন দলের নেতারা।
টানা তিন সপ্তাহ ধরে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞার মুখে গোটা উপত্যকা। বন্দি বা গৃহবন্দি রাজনৈতিক নেতারা। বাড়তি বাহিনীকে আগামী এক মাস রেখে দেওয়ার পক্ষপাতী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সব মিলিয়ে কাশ্মীরের পরিস্থিতি আদৌ ইতিবাচক নয় বলে মত শাসক শিবিরেরই একাংশের। তাঁদের মতে, কাশ্মীর কার্যত জনবিক্ষোভের মুখে দাঁড়িয়ে। স্রেফ বিধিনিষেধ একটু ঢিলে হওয়ার অপেক্ষা। সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা উঠতে চলেছে সুপ্রিম কোর্টে। কাশ্মীর নীতির প্রতিবাদে ইস্তফা দিয়েছেন এক আইএএস অফিসারও। সব স্তরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করায় রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলায় নামার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি।
বিজেপি নেতৃত্বের যুক্তি, জাতীয় সংহতির প্রশ্নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল অনুচ্ছেদ ৩৭০। ‘এক দেশ, এক সংবিধান’ নীতিও প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে ‘জনজাগরণ যাত্রা’ কর্মসূচি দল হাতে নিয়েছে। দেশের ৩৭০টি ছোট-বড় শহরে হবে তা। কার্যকরী সভাপতি জে পি নড্ডার নেতৃত্বে যে কমিটি এই কর্মসূচির দায়িত্বে রয়েছে, তাতে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, গজেন্দ্র শেখাওয়াত, প্রহ্লাদ জোশী ও জিতেন্দ্র সিংহ। এ ছাড়া রয়েছেন সাংসদ রাজ্যবর্ধন রাঠৌর, তেজস্বী সূর্য ও লাদাখের সাংসদ জামইয়াং সেরিং নামগিয়াল। বিশিষ্ট জনেদের যাঁরা কাশ্মীর নীতির বিরোধিতায় সরব হয়েছেন, তাঁদেরও পাশে টানতে তৎপর বিজেপি। গজেন্দ্র আজ বলেন, ‘‘বিশিষ্ট জনেদের কাছে তুলে ধরা হবে, জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে কেন ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি ছিল।’’
সব দেখে কংগ্রেস বলছে, ‘‘শাসক দল ভেবেছিল অগস্টের মধ্যেই পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু তার কোনও লক্ষণ নেই। উল্টে রাহুল গাঁধীকে শ্রীনগর থেকে ফেরার পথে হাতের কাছে পেয়ে বিমানেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এক কাশ্মীরি মহিলা। তা থেকেই বোঝা যায় কাশ্মীর শান্ত বলে সরকারের দাবি কতটা অসার।’’
প্রচার অভিযানে নামলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের দাবি, সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পাশে গোটা দেশ রয়েছে। তাঁর যুক্তি, কাশ্মীর-সিদ্ধান্তের পরে দলের সদস্য ৩.৮ কোটি থেকে বেড়ে ১৪.৭৮ কোটি হয়েছে। প্রশ্ন হল, বিজেপি যখন মনে করছে গোটা দেশ তাঁদের পাশে রয়েছে, সদস্য সংগ্রহের গ্রাফও যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন কেন এ ভাবে প্রচারাভিযানে নামতে হবে তাদের? মন্ত্রী বলেন, ‘‘বিরোধীরা যাতে মানুকে ভুল বোঝাতে না পারেন।’’