ছবি: সংগৃহীত।
মাসখানেক হয়ে গেল, কাশ্মীরে আটক উপত্যকার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। কবে তাঁরা মুক্তি পাবেন? এখনই সে বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছে না নরেন্দ্র মোদী সরকার। তবে উপত্যকায় যাতে কারও মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় কেন্দ্র।
শনিবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল জানিয়েছেন, কাশ্মীরে বসবাসকারী মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ দিন অজিত ডোভাল বলেন, ‘‘ঠিক কত দিন উপত্যকার রাজনৈতিক নেতাদের আটক করে রাখা হবে তার সঠিক সময়সীমা জানানো যাচ্ছে না।’’
গত মাসের গোড়ায় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর থেকে উপত্যকায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি শুরু হয়। কার্ফু জারি করা ছাড়াও বন্ধ করে দেওয়া হয় টেলি-যোগাযোগ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা। সেই সঙ্গে প্রায় ৪০০ জন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীকে হয় গ্রেফতার, না হয় আটক করা হয়। এর মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতির মতো রাজনৈতিক হেভিওয়েটরাও। তাঁদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। তবে মাসখানেক পার হয়ে গেলেও তাঁরা কবে মুক্তি পাবেন, তা এখনই বলতে পারছে না কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: একনায়কতন্ত্র চলছে কাশ্মীরে: কবিতা
আরও পড়ুন: আকাশসীমায় ঢুকবে না কোবিন্দের বিমান, ভারতের অনুরোধ ফেরাল পাকিস্তান
আরও পড়ুন: দলিত বলে ‘অপমান’, উত্তরপ্রদেশে সরকারি আধিকারিকের আত্মহত্যা!
এই আবহে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিরোধীরা। মেহবুবার মেয়ে সানা ইলতিজা জাভেদও তাঁর মায়ের মুক্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। পাশাপাশি, এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠিও লেখেন তিনি। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘কাশ্মীরিদের পশুর মতো খাঁচায় পুরে রাখা হয়েছে এবং তাঁদের সাধারণ মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অবশ্য মায়ের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পান ইলতিজা। এই আবহে এ দিন ডোভালের মন্তব্য, ‘‘আমরা কাউকেই আঘাত করতে চাই না। তবে উপত্যকার পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। এখানে কারও মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়নি।’’
ডোভালের দাবি, ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবেই’ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের আটক করে রাখা হয়েছে। এবং সব কিছুই করা হয়েছে আইনমোতাবেক। এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ জানাতে তাঁরা আইনি সাহায্য নিতে পারেন বলে জানিয়েছেন ডোভাল। তাঁর কথায়, ‘‘আইনি পরিকাঠামোর মধ্যে থেকেই সব কিছু করা হয়েছে। আটক থাকার বিষয়টি নিয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। কারও বিরুদ্ধেই দেশদ্রোহিতা বা অপরাধমূলক ধারা প্রয়োগ করা হয়নি। গণতন্ত্র সচল রাখার মতো পরিস্থিতি যত ক্ষণ না তৈরি হয়, তত ক্ষণ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবেই তাঁদের আটক করা হয়েছে। এবং আমার মনে হয়, শীঘ্রই সেই পরিস্থিতি তৈরি হবে।’’