ছবি: পিটিআই।
জম্মু-কাশ্মীরের সর্বত্র মোবাইল ফোনে টুজি ইন্টারনেট ফের চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ফলে প্রায় ১৭৫ দিন পরে জম্মু-কাশ্মীরে ইন্টারনেট পরিষেবার বড় অংশ চালু হল।
গত কাল রাতে এক নির্দেশে প্রশাসন জানায়, ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত গোটা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোবাইল ফোনে টুজি ইন্টারনেট চালু করা হবে। সম্প্রতি উত্তর কাশ্মীরের একাংশ ও জম্মুতে টুজি ইন্টারনেট চালু করা হয়েছিল। তবে ইন্টারনেটে নানা নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল। সরকারি তালিকায় থাকা ৩০১টি ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোনও সাইট দেখতে পারবেন না গ্রাহকেরা। এখন অবশ্য স্থানীয়, ভারতীয় ও বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সাইটও দেখা যাবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল থাকছে। সেইসঙ্গে বন্ধ রাখা হবে ব্যক্তিগত ব্রডব্যান্ড পরিষেবাও।
তবে টুজি পরিষেবায় ইন্টারনেট শ্লথ হওয়ায় কাজের কাজ বিশেষ হচ্ছে না বলেই দাবি কাশ্মীরের বাসিন্দাদের। শ্রীনগরের বাসিন্দা ইয়াওয়ার নাজ়ির বললেন, ‘‘মোবাইল নেট চালু হওয়ার খবর পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু দেখলাম একটা ওয়েবসাইট খুলতেই অনেক সময় লাগছে। ফোর জি-ফাইভ জি-র যুগে এই শ্লথ গতির ইন্টারনেট নিয়ে আমরা কী করব?’’ কুপওয়ারা জেলার বাসিন্দা পীরজ়াদা মনজ়ুরের বক্তব্য, ‘‘ইমেল খুলতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগছে। ইন্টারনেটের এই গতি হলে অনলাইনে ফর্ম ভর্তি করা বা পাসপোর্টের আবেদন করার মতো কাজ হবে কী ভাবে? এখনও এ সব কাজ করতে সরকারি দফতরে খোলা ইন্টারনেট কিয়স্কেই যেতে হচ্ছে।’’ শ্রীনগরের আইসান আহমেদের কথায়, ‘‘অনেকেই প্রবাসী আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হোয়াটসঅ্যাপ ও সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ব্যবহার করেন। সে সব বন্ধই আছে। এখনও অনেক খরচ করে ফোন করতে হচ্ছে। ডিজিটাল যুগে এমন অবস্থার কথা কেউ ভাবতে পারে?’’
আরও পড়ুন: প্রজাতন্ত্র দিবসে নাশকতার ছক মাওবাদীদের
প্রায় একই সুর আয়ারল্যান্ড প্রবাসী কাশ্মীরি গবেষক মহম্মদ তাহিরের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘উত্তর কোরিয়ার কায়দায় কাশ্মীরে নেট চালু করা হয়েছে। যাতে কেবল সরকারি তালিকায় থাকা ওয়েবসাইট দেখা যাবে। তার মানে এত দিন পরে নেট চালু হলেও আমি আত্মীয়স্বজনের মুখ দেখতে পাব না। আমার গবেষণার জন্য অনলাইনে সাক্ষাৎকার নিয়ে তথ্যও সংগ্রহ করতে পারব না।’’