মনসিয়া ভি পি ছবি ফেসবুক।
তিনি হিন্দু নন, আর সে কারণেই ভারতনাট্যম শিল্পী মনসিয়া ভি পি-কে নৃত্য পরিবেশনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল কেরলের ত্রিশূরের এক মন্দির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
শিল্পীর অভিযোগ, আগামী ২১ এপ্রিল তাঁর নাচের অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে কুড়ালমানিক্যম মন্দিরে। কিন্তু রবিবার মন্দির কমিটির এক সদস্য জানান, তাঁকে নাচের অনুমতি দেওয়া হবে না। কেন না তিনি হিন্দু নন। শুধু তাই নয়, ওই সদস্য আরও জানিয়েছেন যে, ধর্মের ভিত্তিতে মঞ্চ বরাদ্দ করা হয়েছে। কে ভাল শিল্পী, কে নয় সে সব দেখা হবে না।
মনসিয়া বলেন, “যে হেতু আমার স্বামী এক জন হিন্দু, আমাকে এটাও প্রশ্ন করা হয় আমি কি হিন্দু ধর্ম নিয়েছি? এমনকি ওই সদস্য এটাও বলেন, আমি যদি হিন্দু ধর্ম নিই, তা হলে নাচের বিষয়টি বিবেচনা করে দেখা হবে।” তাঁর কথায়, “মাসখানেক আগে মন্দির কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমার স্বামীকে তাঁরা ভাল ভাবে চেনেন বলেও জানান। সুতরাং আমার সম্পর্কেও তাঁরা জানতেন। অনুষ্ঠানের জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁর নামও ছাপিয়েছেন। কিন্তু এখন তাঁরা সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের অনুমতি দিতে রাজি হচ্ছেন না বলে অভিযোগ মনসিয়ার।
এ প্রসঙ্গে মন্দিরের দেবস্বম বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ মেননের দাবি, মন্দিরের রীতি-রেওয়াজ অনুযায়ী একমাত্র হিন্দুরাই মন্দির চত্বরে কোনও অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন। সেই নিয়ম অনুযায়ী অংশগ্রহণের আগে শিল্পীদের ধর্ম জানতে চাওয়া হয়। মনসিয়া প্রসঙ্গে প্রদীপ জানান, এই ভারতনাট্যম শিল্পীর কাছে তাঁর ধর্ম জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন তাঁর কোনও ধর্ম নেই। সে কারণেই মনসিয়াকে অনুষ্ঠানের শিল্পী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রদীপের কথায়, “আমরা মন্দিরের নিয়ম ভাঙতে পারি না।”
এই প্রথম নয়, ধর্মের জন্য বাদ পড়ার অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে তাঁর, এমনটাই জানিয়েছেন মনসিয়া। বছর কয়েক আগেও গুরুভায়ুর শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে নাচের অনুমতি দেওয়া হয়নি তাঁকে। এ ছাড়া এক জন মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও ধ্রুপদী নৃত্য কেন করছেন, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। এমনকি রোষের মুখেও পড়তে হয়েছে বলেও দাবি মনসিয়ার।